০৭:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

কিশোরীগঞ্জে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা (৩৫) নামের এক যুবকের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় গাছে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার(১০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মোস্তাফিজার ওই গ্রামের ইসলাম আলীর ছেলে ও তিন সন্তানের জনক। সে পেশায় একজন গরু ব্যবসায়ী ছিল।

পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একই এলাকার মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ১১১ শতক জমি কিনে মোস্তাফিজার। কিছুদিন পর মিজানুরের পরিবার জমিটি ফেরত দেওয়ার জন্য বললে মোস্তাফিজার তা ফেরত দিতে চায়নি। এনিয়ে দুই দফায় গ্রাম্য সালিশ বসানো হয়। তৃতীয় ও শেষ দফায় বৃহস্পতিবার(৯ অক্টোবর) রাতে সালিশে সীদ্ধান্ত হয় ৫ লাখ টাকার ফেরতের বিনিময়ে মোস্তাফিজার ৫৫ শতক জমি ফেরত দিবে মিজানুরের বড় ভাই ওমর ফারুককে।

সালিশ শেষে রাত ১টার দিকে তারা বাড়ি ফিরে আসেন। শুক্রবার সকালে মোস্তাফিজারের বাড়ি থেকে দুইশ গজ দূরে এক বড় বাঁশঝাড়ে গাছের সঙ্গে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী। খবর দিলে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ ও রংপুর থেকে সিআইডির ক্রাইস সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ সুরতাল করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জেলা মর্গে পাঠানো হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় গ্রামের সবাইকে ডেকে তিনদফায় সালিশ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতেও সালিশে কিছু সীধান্ত নেয়া হয়। সালিশে আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম। সালিশে কি সীধান্ত নেয়া হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা বড় ঘটনা, এই মুহুর্তে বলা সম্ভব না।

মোস্তাফিজারে চাচি জেন্নাতুল বেগম বলেন, আমার ভাতিজা মোস্তফিজারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে আমি দোষীদের বিচার চাই। মোস্তফিজারের ভাই মাইনুল ইসলাম বলেন, সালিশ শেষে রাত ১০টার দিকে মেলাবর রোড বাজরের একটি দোকানে গ্রামের প্রভাবশালী কয়েকজন বসে আমার ভাইকে বেশি ঝামেলা না করে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ৫৫ শতক জমি মিজানুরের বড় ভাই ওমর ফারুককে দেয়ার জন্য বলে। এতে আমরা রাজি না হয়ে বাড়ি ফিরে আসি রাত ১টার দিকে।

রাত ২টার দিকে আমার ভাইয়ের ফোনে কে বা কারা ফোন দিলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। রাতে সে আর বাড়ি ফিরে না। সকালে বাড়ি থেকে দুইশ গজ দূরে বড় বাঁশঝাড়ের একটি গাছে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আমার ভাইয়ের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় এলাকাবাসী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মিজানুর ও তার বড় ভাই ওমর ফারুক পরিকল্পনা আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। আমি তাদের বিচার চাই।

কিশোরীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আব্দুল কুদ্দুস বলেন, সকালে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জমি নিয়ে সালিশের বিষয়টি আমরা শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কিশোরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও রংপুর থেকে সিআইডির ক্রাইস সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ সুরতাল করে।

দুপুরে লাশ উদ্ধার করে জেলা মর্গে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায় নি। তবে তার হাত ও পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল।

জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে নীলফামারীতে মিষ্টি বিতরণ

কিশোরীগঞ্জে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত ০৮:৩৮:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা (৩৫) নামের এক যুবকের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় গাছে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার(১০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মোস্তাফিজার ওই গ্রামের ইসলাম আলীর ছেলে ও তিন সন্তানের জনক। সে পেশায় একজন গরু ব্যবসায়ী ছিল।

পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একই এলাকার মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ১১১ শতক জমি কিনে মোস্তাফিজার। কিছুদিন পর মিজানুরের পরিবার জমিটি ফেরত দেওয়ার জন্য বললে মোস্তাফিজার তা ফেরত দিতে চায়নি। এনিয়ে দুই দফায় গ্রাম্য সালিশ বসানো হয়। তৃতীয় ও শেষ দফায় বৃহস্পতিবার(৯ অক্টোবর) রাতে সালিশে সীদ্ধান্ত হয় ৫ লাখ টাকার ফেরতের বিনিময়ে মোস্তাফিজার ৫৫ শতক জমি ফেরত দিবে মিজানুরের বড় ভাই ওমর ফারুককে।

সালিশ শেষে রাত ১টার দিকে তারা বাড়ি ফিরে আসেন। শুক্রবার সকালে মোস্তাফিজারের বাড়ি থেকে দুইশ গজ দূরে এক বড় বাঁশঝাড়ে গাছের সঙ্গে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী। খবর দিলে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ ও রংপুর থেকে সিআইডির ক্রাইস সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ সুরতাল করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জেলা মর্গে পাঠানো হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় গ্রামের সবাইকে ডেকে তিনদফায় সালিশ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতেও সালিশে কিছু সীধান্ত নেয়া হয়। সালিশে আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম। সালিশে কি সীধান্ত নেয়া হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা বড় ঘটনা, এই মুহুর্তে বলা সম্ভব না।

মোস্তাফিজারে চাচি জেন্নাতুল বেগম বলেন, আমার ভাতিজা মোস্তফিজারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে আমি দোষীদের বিচার চাই। মোস্তফিজারের ভাই মাইনুল ইসলাম বলেন, সালিশ শেষে রাত ১০টার দিকে মেলাবর রোড বাজরের একটি দোকানে গ্রামের প্রভাবশালী কয়েকজন বসে আমার ভাইকে বেশি ঝামেলা না করে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ৫৫ শতক জমি মিজানুরের বড় ভাই ওমর ফারুককে দেয়ার জন্য বলে। এতে আমরা রাজি না হয়ে বাড়ি ফিরে আসি রাত ১টার দিকে।

রাত ২টার দিকে আমার ভাইয়ের ফোনে কে বা কারা ফোন দিলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। রাতে সে আর বাড়ি ফিরে না। সকালে বাড়ি থেকে দুইশ গজ দূরে বড় বাঁশঝাড়ের একটি গাছে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আমার ভাইয়ের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় এলাকাবাসী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মিজানুর ও তার বড় ভাই ওমর ফারুক পরিকল্পনা আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। আমি তাদের বিচার চাই।

কিশোরীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আব্দুল কুদ্দুস বলেন, সকালে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জমি নিয়ে সালিশের বিষয়টি আমরা শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কিশোরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও রংপুর থেকে সিআইডির ক্রাইস সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ সুরতাল করে।

দুপুরে লাশ উদ্ধার করে জেলা মর্গে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায় নি। তবে তার হাত ও পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল।