০৭:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

সৈয়দপুরে লায়ন্স ক্লাবের সভাপতির পদত্যাগ দাবিতে ৭টি সড়ক অবরোধ

নীলফামারীর সৈয়দপুর লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি জাকির হোসেন মেননের পদত্যাগ দাবিতে শহরের কেন্দ্র, পুলিশ বক্স মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেৃ লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

এতে প্রধান ৭ টি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পুরো শহর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সড়কগুলো হলো বিমানবন্দর সড়ক, রংপুর রোড, দিনাজপুর রোড, শেরে বাংলা সড়ক, শহীদ সামসুল হক সড়ক, শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক, কলাহাটি রোড।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে তিনটায় প্রতিষ্ঠান থেকে বিক্ষোভ মিছিল সহ এসে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এসময় সড়কগুলোতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।

অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং বক্তব্য দেয়। তারা জানায়, দফা এক দাবি এক, সভাপতি মেননের পদত্যাগ। কারণ তার স্বেচ্ছাচারীতায় প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। তিনি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে প্রতারণা করেছে। দূর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রায় দুই মাস আগে আন্দোলনের মুখে স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি শফিয়ার রহমান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মশিউর রহমান কে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অব্যাহতি ঘোষণা দিয়েও এ সংক্রান্ত কাগজে স্বাক্ষর করছেন না।

এমনকি ওই বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর ই আলম সিদ্দিকীকে সভাপতি ও সিনিয়র শিক্ষক মজিবুর রহমান চৌধুরী মুকুলকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের লিখিতভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে টালবাহানা করছেন। একারণে গত দুই মাস ধরে শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না।

শিক্ষকদের অভিযোগ সৈয়দপুর উপজেলা যুবদলের নেতা জাকির হোসেন মেনন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগে গত বছর ৬ আগষ্ট দলীয় দাপটে লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি দাবি করেন। প্রায় ৪৮ জন সদস্যকে জোর করে ড্রোপ আউট করে ক্লাবকে পারিবারিক ক্লাবে পরিণত করে। এরপর লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ কুক্ষিগত করে আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দেয়াসহ নিজের লোকদের সভাপতি ও অধ্যক্ষ পদে বসিয়ে আর্থিক দূর্নীতি শুরু করে।

সভাপতির সম্মানীর নামে প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা পকেটস্থ করাসহ নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসবের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকদের অন্যায়ভাবে শোকজ ও হেনস্তা করেন। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষকরা তথ্য প্রমাণসহ উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে দুই দফা তদন্ত করা হয়। এমনকি অভিভাবক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যস্ততায় অচলাবস্থা দূর করতে বার বার অনুরোধ করার পরও ক্লাব সভাপতি ভ্রক্ষেপ করছেন না।

বরং জটিলতা বাড়ানোসহ প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা বেতন না পেয়ে চরম দূরাবস্থায় পড়েছি। বাধ্য হয়ে আমরা পথে নেমেছি। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবোনা। দূর্নীতিবাজ ক্লাব সভাপতি ও যুবদল নেতা জাকির হোসেন মেননের পদত্যাগ দাবি করছি।

এব্যাপারে সৈয়দপুর লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি জাকির হোসেন মেননের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোন বার বার কল দেয়া হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ না করায় তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি। সৈয়দপুর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ মাহমুদুন নবী আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে আন্দোলন তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। আন্দোলনরতরা তার বক্তব্য নাখজ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষক কর্মচারী শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে নীলফামারীতে মিষ্টি বিতরণ

সৈয়দপুরে লায়ন্স ক্লাবের সভাপতির পদত্যাগ দাবিতে ৭টি সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত ০৬:১৮:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

নীলফামারীর সৈয়দপুর লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি জাকির হোসেন মেননের পদত্যাগ দাবিতে শহরের কেন্দ্র, পুলিশ বক্স মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেৃ লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

এতে প্রধান ৭ টি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পুরো শহর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সড়কগুলো হলো বিমানবন্দর সড়ক, রংপুর রোড, দিনাজপুর রোড, শেরে বাংলা সড়ক, শহীদ সামসুল হক সড়ক, শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক, কলাহাটি রোড।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে তিনটায় প্রতিষ্ঠান থেকে বিক্ষোভ মিছিল সহ এসে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এসময় সড়কগুলোতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।

অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং বক্তব্য দেয়। তারা জানায়, দফা এক দাবি এক, সভাপতি মেননের পদত্যাগ। কারণ তার স্বেচ্ছাচারীতায় প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। তিনি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে প্রতারণা করেছে। দূর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রায় দুই মাস আগে আন্দোলনের মুখে স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি শফিয়ার রহমান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মশিউর রহমান কে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অব্যাহতি ঘোষণা দিয়েও এ সংক্রান্ত কাগজে স্বাক্ষর করছেন না।

এমনকি ওই বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর ই আলম সিদ্দিকীকে সভাপতি ও সিনিয়র শিক্ষক মজিবুর রহমান চৌধুরী মুকুলকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের লিখিতভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে টালবাহানা করছেন। একারণে গত দুই মাস ধরে শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না।

শিক্ষকদের অভিযোগ সৈয়দপুর উপজেলা যুবদলের নেতা জাকির হোসেন মেনন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগে গত বছর ৬ আগষ্ট দলীয় দাপটে লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি দাবি করেন। প্রায় ৪৮ জন সদস্যকে জোর করে ড্রোপ আউট করে ক্লাবকে পারিবারিক ক্লাবে পরিণত করে। এরপর লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ কুক্ষিগত করে আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দেয়াসহ নিজের লোকদের সভাপতি ও অধ্যক্ষ পদে বসিয়ে আর্থিক দূর্নীতি শুরু করে।

সভাপতির সম্মানীর নামে প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা পকেটস্থ করাসহ নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসবের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকদের অন্যায়ভাবে শোকজ ও হেনস্তা করেন। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষকরা তথ্য প্রমাণসহ উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে দুই দফা তদন্ত করা হয়। এমনকি অভিভাবক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যস্ততায় অচলাবস্থা দূর করতে বার বার অনুরোধ করার পরও ক্লাব সভাপতি ভ্রক্ষেপ করছেন না।

বরং জটিলতা বাড়ানোসহ প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা বেতন না পেয়ে চরম দূরাবস্থায় পড়েছি। বাধ্য হয়ে আমরা পথে নেমেছি। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবোনা। দূর্নীতিবাজ ক্লাব সভাপতি ও যুবদল নেতা জাকির হোসেন মেননের পদত্যাগ দাবি করছি।

এব্যাপারে সৈয়দপুর লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি জাকির হোসেন মেননের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোন বার বার কল দেয়া হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ না করায় তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি। সৈয়দপুর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ মাহমুদুন নবী আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে আন্দোলন তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। আন্দোলনরতরা তার বক্তব্য নাখজ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষক কর্মচারী শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।