ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ী ঢলে নীলফামারীর ডিমলা ডালিয়া পয়েন্ট তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রবিবার (৩ আগষ্ট) সকাল ৬টায় বিপদসীমার ৫২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
এরপর সকাল ৯টায় ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপদসীমা ছুঁইছুঁই। তবে তিন ঘন্টার ব্যবধানে দুপুর ১২ টায় বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, উজানে পানি বাড়লে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টেও পানি বাড়ে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বন্যার পানি নিয়ন্ত্রনে ব্যারাজের ৪৪টি শ্লুইজ গেট (জলকপাট) খুলে দেওয়া হয়েছে। সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পাউবোর পানি শাখা প্রকৌশল বিভাগ।
এদিকে, তিস্তার বন্যায় জেলার ডিমলা উপজেলার পুর্ব ছাতনাই, খগাখাড়বাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী ও জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় চর গ্রামের ৮-১০ হাজার পরিবারের বাড়ী ঘরে পানী প্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানান, জনপ্রতিনিধিরা।
এছাড়াও ব্যারাজের পুর্বদিকে (ভাটি অঞ্চল) লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলার নদী বেস্টিত চর ও চরের গ্রাম গুলো প্লাবিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এলাকার বানভাসী লোকজন বন্যা আতঙ্কে রয়েছে। বাড়ী ঘরে হাঁটু পরিমান পানি প্রবেশ করেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে উঁচু এলকায় সরে যাচ্ছে।
উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, ১০টি চড় গ্রামের লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। নি¤œঞ্চাল ও বিস্তর্ন এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে ধীরে ধীরে বাড়ী ঘরে পানি প্রবেশ করছে। আজ সন্ধ্যা নাগাদ ব্যারাজ পয়েন্টে পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ইতোমধ্যে উপজেলার খগাখড়িবাড়ির বাইশপুকুর গ্রামটি প্লাবিত হয়ে বাড়ী ঘরে পানি প্রবেশ করছে।
এদিকে, পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, এই ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় চরগ্রাম ঝাড়সিংশ্বরসহ অন্যান্য চর গ্রামে বন্যার পানী প্রবেশ করেছে। নিন্মাঞ্চল গুলো প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি ও ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে। ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে।
এদিকে, জেলার জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী, গোপালঝাড় ও আলসিয়া পাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলার নদ নদী বন্যার পানি থৈথৈ করছে।
ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখা) তহিদুল ইসলাম বলেন, উজানের ভারী বর্ষন, পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির ফলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে সন্ধ্যা নাগাদ বন্যার পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ইতোমধ্যেই নিম্নঞ্চলসহ চরগ্রাম গুলো তলিয়ে গেছে।
ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানের ভারী বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, দুপুর ১২ টার দিকে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ১৫) ৫ সেটিমিটার ওপর দিয়ে বন্যার পানী প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি সামাল দিতে ব্যারাজের ৪৪ টি শ্লুইচ গেট (জলকপাট) খুলে রাখা হয়েছে। এজন্য আমরা সর্তকস্থায় আছি।























