উজানের ভারী বর্ষন আর পাহাড়ী ঢলে নীলফামারীর ডিমলা ডালিয়া পয়েন্টে বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ছুঁইছুঁই। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় পর্যন্ত এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে আজ সকাল ৯টায় তা কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে ব্যারাজের বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।
পরিস্থিতি স্বাভবিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজের (৪৪টি) সুইচ গেইট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ডালিয়া ডিভিশনের গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) নূরুল ইসলাম পানি পরিস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে, তিস্তার বন্যায় জেলার ডিমলা উপজেলার পুর্ব ছাতনাই, খগাখাড়বাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী ও জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় চর গ্রামের ৮ হাজার পরিবারে বন্যার পানী প্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
এছাড়াও ব্যারাজের পুর্বদিকে (ভাটি অঞ্চল) লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলার নদী বেস্টিত চর ও চরের গ্রাম গুলো প্লাবিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এলাকার বানভাসী লোকজন বন্যা আতঙ্কে রয়েছে।
উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, চড় গ্রামের লোকজন আতঙ্কে দিন যাপন করছে। কখন যে বাড়ী ঘর সরাতে হবে ঠিক নেই। নি¤œঞ্চাল ও বিস্তর্ন এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। যে কোন সময় বাড়ী ঘরে প্রবেশ করতে পারে। উজানের পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে সন্ধ্যা নাগাদ ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
এদিকে, পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুবাস চন্দ্র বলেন, ঝাড়সিংশ্বরসহ অন্যান্য চর গ্রামে বন্যার পানী প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। এ পর্যন্ত ইউনিয়নে বণ্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখা) তহিদুল ইসলাম বলেন, উজানের ভারী বর্ষন, পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির ফলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে বন্যা হতে পারে। ইতোমধ্যেই নিম্নঞ্চল গুলো তলিয়ে গেছে।
ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানের ভারী বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, সকাল ৯টার দিকে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) ৮ সেটিমিটার নিচ দিয়ে পানী প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের ঢল বন্ধ হলে সন্ধ্যা নাগাদ তিস্তার পানি আরও কমার আশা করা হচ্ছে। বন্যার পানি সামাল দিতে কর্মকর্তা কর্মচারীরা ব্যস্ত সময় পার করছে। এদিকে ব্যারাজের ৪৪ টি শ্লুইচ গেট খুলে রাখা হয়েছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুজ্জামান বলেন, উজানের পাহাড়ী ঢলে ও ভারী বর্ষনে তিস্তার পানী আজ সকাল ৬ টায় (৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) বিপৎসীসা ছুঁইছুঁই। সকাল ৯ টায় তা কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বন্যা এলাকায় নিয়মিত খোঁজখবর নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
























