০৪:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

মনে হয় আমরা বাংলাদেশের নাগরিক না রহিঙ্গা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের এলজিইডির আওতাধীন জনগুরুত্বপুর্ন গ্রামীন কাঁচা সড়কগুলো পাকাকরন না হওয়ায় সড়কগুলোর অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। ওই সড়কগুলো পাঁকা করনের জন্য গত ১০ বছর আগে এলজিইডি থেকে আইডি প্রাপ্ত হওয়ায় সড়কগুলো সংস্কারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ।

ফলে একদিকে কাঁচা সড়ক পাঁকা না হওয়া অপর দিকে পাঁকা করনের আশায় দিনের পর দিন সংস্কার না হওয়ার কারনে গ্রামীন সড়কগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে করে দুভোর্গে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

বাহাগিলি ইউনিয়ন পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, বাহাগিলি ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডে গ্রামীন জনপদের জনসাধারনের চলাচলের জন্য প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে বাহাগিলি ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডে পিপড়া কামরীর মোড় হতে পশ্চিমপাড়া রওজাতুল উলুম মাদ্রাসার সামনে থেকে বসুনিয়া পাড়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার।

৩নং ওয়ার্ডেও বাহাগিলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজাউদ্দোলা লিপটনের বাড়ির কাছ থেকে এন্দাদুলের দোকানের সামনে দিয়ে পাগলাটারী পর্যন্ত দুই কিলোমিটার,একই ওয়ার্ডের কাচারীপাড়া বেলালের মোড় হতে কাচারীর হাট তারাগঞ্জ সড়কের পাগলাটারী পর্যন্ত দুই কিলোমিটার,দুই নম্বর ওয়ার্ডের নান্নুর বাজার থেকে ইসমাইল সিপাহী ডাংগা ব্রীজ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরপাড়া থেকে পাগলাটারী পর্যন্ত এক কিলোমিটারসহ বাহাগিলি ইউনিয়নের বাকি ৬ টি ওয়ার্ডের প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার সড়ক বেহাল হয়ে পড়ে থাকলেও সড়কগুলো সংস্কার করা হয়নি।

গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাহাগিলি ইউনিয়নের নান্নুর বাজার থেকে সিপাহী ডাংগা ব্রীজ পর্যন্ত মাত্র এক কিলোমিটার সড়ক একেবারে চলাচলের অনুপোযোগী। ওই এক কিলোমিটার সড়ক পাকা করাতো দুরের কথা গত দশ বছরে সড়কটিতে এক কোদাল মাটিও ফেলা হয়নি। ফলে সড়কটিতে অসংখ্যা খানাখন্ড দেখা দিয়েছে।

কবিরাজপাড়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা দিল আফরোজ বানু, সমাজকর্মী রেবেকা বানু, ভ্যান চালক দেলদার মিয়া বলেন, গত ৫ থেকে ৭ বছর আগে কয়েককুটি টাকা ব্যায় করে সিপাহীডাংগা গ্রামে চাঁড়ালকাঁটা নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মান হলেও শুধু এককিলোমিটার সড়ক পাঁকা না হওয়ার কারনে ব্রীজটির সুফল পাচ্ছেনা এলাকাবাসী। সড়ক না থাকায় এলাকাবাসী ব্রীজটিতে ধান মৌসুমে ধান ও ভুট্টা মৌসুমে ভুট্টা শুকায়। ওই ব্রীজ দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারেনা।

ওই এক কিলোমিটার সড়ক পাঁকা হলে ব্রীজটি দিয়ে সকলের অবাধ যাতায়াত হত। এদিকে বাহাগিলি ইউনিয়নের ফকিরপাড়া থেকে পাগলাটারী ও উত্তর দুরাকুটি পিপড়া কামরীর মোড় হতে বসুনিয়াপাড়া যাওয়ার রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা সড়কগুলো দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার করা হয়নি। ফলে সড়কের মাঝখানে অসংখ্যা খানাখন্দ, সড়কের দুই ধার ভেঙ্গে গেছে। চলতি বষায় রাস্তাগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে গেছে। উত্তর দুরাকুটি গ্রামের বাসিন্দা মমিনুর রহমান,তাইজুল ইসলাম, দুলাল মিয়া জানান, আমাদের গ্রামে আলম হোসেন নামে একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ছিলেন, তিনি বেঁচে থাকার সময় সর্বশেষ দশ থেকে ১৫ বছর আগে আমাদের রাস্তাটিতে মাটি ভরাট করে সংস্কার করেছিলেন।

তাঁর মুত্যুর পরে আর এক কোদাল মাটিও পরেনি। ফকিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমান,সেকেন্দার, আমিনুর বলেন, ভাই আমাদের ফকিরপাড়া থেকে পাগলাটারী মোড় এই রাস্তাটি কোনদিন সংস্কার হয়নি। রাস্তাটির খুবই নাজুক অবস্থা। আমাদের দুর্ভোগ সইতে না পেরে বর্তমান চেয়ারম্যান এবার নান্নুর বাজারের ক্যানেলের পাড় থেকে সাবিনার দোকান পর্যন্ত দুশ থেকে আড়াইশ মিটার সড়ক হিরিংবন্ড করে দিয়েছে। এসময় তারা আরো বলেন, ভাই দেখেন সড়কের উপর চলতি অর্থবছরে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে একটি কালভার্ট নির্মান হয়েছে। কিন্তু কালভার্টটির দুদিকে সংযোগ সড়ক করে দেয়াতো দুরের কথা কালভার্টটির দুদিকে এক কোদাল মাটি পর্যন্ত দেয়নি ঠিকাদার। ফলে কালভার্টটিতে ভ্যান,রিকসা,সাইকেল,মটর সাইকেল চালিয়ে উঠানো যায়না। আর রাস্তা সংস্কার হবে এটা আমরা সপ্নেও ভাবিনা। মনে হয় আমরা গ্রামবাসী বাংলাদেশের নাগরিকনা আমরা রহিঙ্গা।

উপজেলা প্রকৌশলী মাহামুদুল হাসান বলেন, বাহাগিলি ইউনিয়নের ১৩ টি গুরুত্বপুর্ন রাস্তা পাকা করনের জন্য এলজিউডির আইডিভুক্ত রয়েছে। বরাদ্দ আসলে ওই ১৩ টি রাস্তা একের পর এক টেন্ডার আহবান করে পাঁকাকরন করা হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লতিফুর রহমানের সাথে ফকিরপাড়া গ্রামে নির্মিত কালভার্টটির দুই দিকে সংযোগ সড়ক ও মাটি ভরাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কালভার্টটির সংযোগ সড়ক ও মাটি ভরাটের বিষয়ে বার বার ঠিকাদারের সাথে কথা বলছি কিন্তু তিনি কোনো কর্নপাত করছেননা। আগামী দুএকদিনের মধ্যে ঠিকাদার না আসলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।

জনপ্রিয় সংবাদ

নীলফামারীতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ইউনিটের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন-২০২৫ অনুষ্ঠিত

মনে হয় আমরা বাংলাদেশের নাগরিক না রহিঙ্গা

প্রকাশিত ১২:০৭:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের এলজিইডির আওতাধীন জনগুরুত্বপুর্ন গ্রামীন কাঁচা সড়কগুলো পাকাকরন না হওয়ায় সড়কগুলোর অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। ওই সড়কগুলো পাঁকা করনের জন্য গত ১০ বছর আগে এলজিইডি থেকে আইডি প্রাপ্ত হওয়ায় সড়কগুলো সংস্কারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ।

ফলে একদিকে কাঁচা সড়ক পাঁকা না হওয়া অপর দিকে পাঁকা করনের আশায় দিনের পর দিন সংস্কার না হওয়ার কারনে গ্রামীন সড়কগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে করে দুভোর্গে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

বাহাগিলি ইউনিয়ন পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, বাহাগিলি ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডে গ্রামীন জনপদের জনসাধারনের চলাচলের জন্য প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে বাহাগিলি ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডে পিপড়া কামরীর মোড় হতে পশ্চিমপাড়া রওজাতুল উলুম মাদ্রাসার সামনে থেকে বসুনিয়া পাড়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার।

৩নং ওয়ার্ডেও বাহাগিলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজাউদ্দোলা লিপটনের বাড়ির কাছ থেকে এন্দাদুলের দোকানের সামনে দিয়ে পাগলাটারী পর্যন্ত দুই কিলোমিটার,একই ওয়ার্ডের কাচারীপাড়া বেলালের মোড় হতে কাচারীর হাট তারাগঞ্জ সড়কের পাগলাটারী পর্যন্ত দুই কিলোমিটার,দুই নম্বর ওয়ার্ডের নান্নুর বাজার থেকে ইসমাইল সিপাহী ডাংগা ব্রীজ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরপাড়া থেকে পাগলাটারী পর্যন্ত এক কিলোমিটারসহ বাহাগিলি ইউনিয়নের বাকি ৬ টি ওয়ার্ডের প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার সড়ক বেহাল হয়ে পড়ে থাকলেও সড়কগুলো সংস্কার করা হয়নি।

গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাহাগিলি ইউনিয়নের নান্নুর বাজার থেকে সিপাহী ডাংগা ব্রীজ পর্যন্ত মাত্র এক কিলোমিটার সড়ক একেবারে চলাচলের অনুপোযোগী। ওই এক কিলোমিটার সড়ক পাকা করাতো দুরের কথা গত দশ বছরে সড়কটিতে এক কোদাল মাটিও ফেলা হয়নি। ফলে সড়কটিতে অসংখ্যা খানাখন্ড দেখা দিয়েছে।

কবিরাজপাড়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা দিল আফরোজ বানু, সমাজকর্মী রেবেকা বানু, ভ্যান চালক দেলদার মিয়া বলেন, গত ৫ থেকে ৭ বছর আগে কয়েককুটি টাকা ব্যায় করে সিপাহীডাংগা গ্রামে চাঁড়ালকাঁটা নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মান হলেও শুধু এককিলোমিটার সড়ক পাঁকা না হওয়ার কারনে ব্রীজটির সুফল পাচ্ছেনা এলাকাবাসী। সড়ক না থাকায় এলাকাবাসী ব্রীজটিতে ধান মৌসুমে ধান ও ভুট্টা মৌসুমে ভুট্টা শুকায়। ওই ব্রীজ দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারেনা।

ওই এক কিলোমিটার সড়ক পাঁকা হলে ব্রীজটি দিয়ে সকলের অবাধ যাতায়াত হত। এদিকে বাহাগিলি ইউনিয়নের ফকিরপাড়া থেকে পাগলাটারী ও উত্তর দুরাকুটি পিপড়া কামরীর মোড় হতে বসুনিয়াপাড়া যাওয়ার রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা সড়কগুলো দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার করা হয়নি। ফলে সড়কের মাঝখানে অসংখ্যা খানাখন্দ, সড়কের দুই ধার ভেঙ্গে গেছে। চলতি বষায় রাস্তাগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে গেছে। উত্তর দুরাকুটি গ্রামের বাসিন্দা মমিনুর রহমান,তাইজুল ইসলাম, দুলাল মিয়া জানান, আমাদের গ্রামে আলম হোসেন নামে একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ছিলেন, তিনি বেঁচে থাকার সময় সর্বশেষ দশ থেকে ১৫ বছর আগে আমাদের রাস্তাটিতে মাটি ভরাট করে সংস্কার করেছিলেন।

তাঁর মুত্যুর পরে আর এক কোদাল মাটিও পরেনি। ফকিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমান,সেকেন্দার, আমিনুর বলেন, ভাই আমাদের ফকিরপাড়া থেকে পাগলাটারী মোড় এই রাস্তাটি কোনদিন সংস্কার হয়নি। রাস্তাটির খুবই নাজুক অবস্থা। আমাদের দুর্ভোগ সইতে না পেরে বর্তমান চেয়ারম্যান এবার নান্নুর বাজারের ক্যানেলের পাড় থেকে সাবিনার দোকান পর্যন্ত দুশ থেকে আড়াইশ মিটার সড়ক হিরিংবন্ড করে দিয়েছে। এসময় তারা আরো বলেন, ভাই দেখেন সড়কের উপর চলতি অর্থবছরে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে একটি কালভার্ট নির্মান হয়েছে। কিন্তু কালভার্টটির দুদিকে সংযোগ সড়ক করে দেয়াতো দুরের কথা কালভার্টটির দুদিকে এক কোদাল মাটি পর্যন্ত দেয়নি ঠিকাদার। ফলে কালভার্টটিতে ভ্যান,রিকসা,সাইকেল,মটর সাইকেল চালিয়ে উঠানো যায়না। আর রাস্তা সংস্কার হবে এটা আমরা সপ্নেও ভাবিনা। মনে হয় আমরা গ্রামবাসী বাংলাদেশের নাগরিকনা আমরা রহিঙ্গা।

উপজেলা প্রকৌশলী মাহামুদুল হাসান বলেন, বাহাগিলি ইউনিয়নের ১৩ টি গুরুত্বপুর্ন রাস্তা পাকা করনের জন্য এলজিউডির আইডিভুক্ত রয়েছে। বরাদ্দ আসলে ওই ১৩ টি রাস্তা একের পর এক টেন্ডার আহবান করে পাঁকাকরন করা হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লতিফুর রহমানের সাথে ফকিরপাড়া গ্রামে নির্মিত কালভার্টটির দুই দিকে সংযোগ সড়ক ও মাটি ভরাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কালভার্টটির সংযোগ সড়ক ও মাটি ভরাটের বিষয়ে বার বার ঠিকাদারের সাথে কথা বলছি কিন্তু তিনি কোনো কর্নপাত করছেননা। আগামী দুএকদিনের মধ্যে ঠিকাদার না আসলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।