০২:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

নীলফামারীতে রাতে অন্ধকারে দুই ট্রাক পুরাতন বই বিক্রি করেছেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার

নীলফামারী সদর উপজেলায় মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পুরাতন বই গোপনে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৯শে সেপ্টেম্বর ভোর আনুমানিক ৫টায় নীলফামারী সরকারি  উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে পুরাতন বইয়ের দুটি ট্রাক বের হতে দেখে স্থানীয়রা।

সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে, এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তথ্য মতে জানা গেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশেই এসব পুরাতন বই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রাখা হয়। ১৯  সেপ্টেম্বর গচ্ছিত এসব পুরাতন বই রাতে অন্ধকারে দুটি ট্রাকে  করে ভোর ৫ টায় বিদ্যালয়ের মুলফটক দিয়ে বেরিয়ে যায়। বই বোঝাই ট্রাক দুটি বেরিয়ে যাওয়ার সময় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের জেলা ও সদর উপজেলার কয়েকজন ব্যক্তিকে দেখা যায়, বলে জানান স্থানীয়রা।

যেখানে সরকারি বিধি মোতাবেক কমিটি গঠনের কথা থাকলেও কোনকিছুর তোয়াক্কা না করে গোপনে এসব পুরাতন বই বিক্রি করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.টি.এম নুরল আমীন শাহ। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, সরকারি বিধি মোতাবেক পুরাতন বই বিক্রি করেছেন। কিন্তু বই বিক্রির তথ্য চাইতে গেলে, তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে মাধ্যমিক কতৃপক্ষ। বই বিক্রির যাবতীয় তথ্যের জন্য গত ২৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর নির্ধারিত তথ্যপ্রাপ্তি আবেদন পত্র ফরমে আবেদন করা হয়।

এইসব তথ্য গুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অত্রাফিসে সংরক্ষিত না থাকায় তিনি গত ০৯ অক্টোবর ০৫.৪৭.৭৩৬৪.০০০.০০০.৩৫.০০২৮-১১৮৭ স্মারকে একটি পত্রে জানান, সংশ্লিষ্ট অফিসে আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা হলো। গত ১৩ অক্টোবর তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী তথ্যপ্রাপ্তি ফরমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়। কিন্তু ৩০ কার্যদিবস অতিবাহিত হলেও তথ্যপ্রাপ্তি ব্যক্তির খবর নেননি কতৃপক্ষ।

নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নলিনী কান্ত রায় মুঠোফোনে বলেন, ওইসব বই আমাদের নয়, স্কুলের তিনটি কক্ষে পুরাতন বই রেখেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। সামনে পরীক্ষা থাকায় কক্ষ তিনটি খালি করার চাপ দেয়ায় বই গুলো বের করে দুটি কক্ষ খালি করেছে। আমাকে জানিয়ে তাদের বই তাঁরা নিয়ে গেছে, এছাড়া আমি কিছুই জানিনা।

তথ্য অধিকার ফরমের মুল্যায়ন না করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.টি.এম নুরুল আমীন শাহ জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করে, আমরা বিধি মোতাবেক পরিত্যক্ত বইগুলো বিক্রি করেছি। আপনাদের যা করার আপনারা করতে পারেন, পারলে নিউজ করেন।

বই বিক্রির বিষয় জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান বলেন, অবশ্যই নিয়ম মেনে বইগুলো বিক্রি করেছেন, আমাকে সবকিছু জানিয়েছেন।

এব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুরাতন বই বিক্রির তথ্য আমার কাছে নেই, আমি কি বক্তব্য দিব, যাঁরা বই বিক্রি করেছেন আপনারা তাদের কাছে বক্তব্য নেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

নীলফামারীতে ট্রেনের ধাক্কায় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু

নীলফামারীতে রাতে অন্ধকারে দুই ট্রাক পুরাতন বই বিক্রি করেছেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার

প্রকাশিত ১১:৩৬:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

নীলফামারী সদর উপজেলায় মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পুরাতন বই গোপনে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৯শে সেপ্টেম্বর ভোর আনুমানিক ৫টায় নীলফামারী সরকারি  উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে পুরাতন বইয়ের দুটি ট্রাক বের হতে দেখে স্থানীয়রা।

সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে, এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তথ্য মতে জানা গেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশেই এসব পুরাতন বই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রাখা হয়। ১৯  সেপ্টেম্বর গচ্ছিত এসব পুরাতন বই রাতে অন্ধকারে দুটি ট্রাকে  করে ভোর ৫ টায় বিদ্যালয়ের মুলফটক দিয়ে বেরিয়ে যায়। বই বোঝাই ট্রাক দুটি বেরিয়ে যাওয়ার সময় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের জেলা ও সদর উপজেলার কয়েকজন ব্যক্তিকে দেখা যায়, বলে জানান স্থানীয়রা।

যেখানে সরকারি বিধি মোতাবেক কমিটি গঠনের কথা থাকলেও কোনকিছুর তোয়াক্কা না করে গোপনে এসব পুরাতন বই বিক্রি করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.টি.এম নুরল আমীন শাহ। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, সরকারি বিধি মোতাবেক পুরাতন বই বিক্রি করেছেন। কিন্তু বই বিক্রির তথ্য চাইতে গেলে, তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে মাধ্যমিক কতৃপক্ষ। বই বিক্রির যাবতীয় তথ্যের জন্য গত ২৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর নির্ধারিত তথ্যপ্রাপ্তি আবেদন পত্র ফরমে আবেদন করা হয়।

এইসব তথ্য গুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অত্রাফিসে সংরক্ষিত না থাকায় তিনি গত ০৯ অক্টোবর ০৫.৪৭.৭৩৬৪.০০০.০০০.৩৫.০০২৮-১১৮৭ স্মারকে একটি পত্রে জানান, সংশ্লিষ্ট অফিসে আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা হলো। গত ১৩ অক্টোবর তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী তথ্যপ্রাপ্তি ফরমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়। কিন্তু ৩০ কার্যদিবস অতিবাহিত হলেও তথ্যপ্রাপ্তি ব্যক্তির খবর নেননি কতৃপক্ষ।

নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নলিনী কান্ত রায় মুঠোফোনে বলেন, ওইসব বই আমাদের নয়, স্কুলের তিনটি কক্ষে পুরাতন বই রেখেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। সামনে পরীক্ষা থাকায় কক্ষ তিনটি খালি করার চাপ দেয়ায় বই গুলো বের করে দুটি কক্ষ খালি করেছে। আমাকে জানিয়ে তাদের বই তাঁরা নিয়ে গেছে, এছাড়া আমি কিছুই জানিনা।

তথ্য অধিকার ফরমের মুল্যায়ন না করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.টি.এম নুরুল আমীন শাহ জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করে, আমরা বিধি মোতাবেক পরিত্যক্ত বইগুলো বিক্রি করেছি। আপনাদের যা করার আপনারা করতে পারেন, পারলে নিউজ করেন।

বই বিক্রির বিষয় জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান বলেন, অবশ্যই নিয়ম মেনে বইগুলো বিক্রি করেছেন, আমাকে সবকিছু জানিয়েছেন।

এব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুরাতন বই বিক্রির তথ্য আমার কাছে নেই, আমি কি বক্তব্য দিব, যাঁরা বই বিক্রি করেছেন আপনারা তাদের কাছে বক্তব্য নেন।