নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার নয়াটোলা এলাকায় একটি রাস্তা সংষ্কার করার মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে একটি জায়গায় অনেকটা স্থান ডেবে গেছে। সেখানকার কার্পেটিংসহ খোয়া ডেবে গিয়ে বিশালাকৃতির গর্ত হয়েছে।
এতে অভিযোগ উঠেছে যে, সংস্কার কাজ নিম্নমানের হওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে। ঠিকাদার নামকাওয়াস্তে কাজ করার কারণে এমনটা হয়েছে। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছে এলাকাবাসী।
পৌর এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের নয়াটোলা কলিমনগর এলাকায় খানকা রোডে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ১৪০ মিটার ড্রেন ও রাস্তার সংষ্কার কাজ করা হয়। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কোভিড-১৯ সংস্কার প্যাকেজের আওতায় ১৯ লাখ ৮৬ হাজার ৮১৮ টাকা ব্যায়ে করা এই সংষ্কার কাজের মূল ঠিকাদার রংপুরের জেসমিন এন্ড রাঙ্গা কনট্রাক্টশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
গত ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে এই কাজ শুরু করার কথা থাকলেও ঠিকাদার গড়িমসি করে। পরে সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জোবায়দুল ইসলাম মিন্টু সাব কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজটি সম্পন্ন করেন।
এলাকাবাসী ও পৌরসভার সাবেক সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর কাজী জাহানারা বলেন, চলতি বছর আমাদের এলাকায় যেসব রাস্তা ও ড্রেনের সংস্কার কাজ করা হয়েছে। তার বেশিরভাগই অত্যন্ত নিশ্বমানের উপকরণ দিয়ে নামকাওয়াস্তে সম্পন্ন করেছে ঠিকাদার। আমার বাড়ির সামনের রাস্তায় কয়েক জায়গায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে। ঠিকভাগে রোলার ও রাস্তার মধ্যস্থলে উচু না করায় এমন অবস্থা দাড়িয়েছে।
আর খানকা রোডের অবস্থা খুবই নাজুক। মাত্র ৬ মাসেই রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় গর্ত হয়েছে। একজায়গায় ড্রেনের পাশে ভেঙ্গে খোয়াসহ কার্পেটিং ডেবে গেছে। ঠিকভাবে কাজ করা হলে তো এত অল্প সময়ে এমন হওয়ার কথা না। আমরা এবিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি। একইভাবে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ করেন উপস্থিত অন্যান্য এলাকাবাসী।
অন্যদিকে শহরের চাঁদনগর এলাকার বাসিন্দা মিঠু বলেন, সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের উত্তরপাশের রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু করে শুধু ড্রেন নির্মাণ করে গত ৫ মাস ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। রাস্তা সংস্কারের জন্য আগের কার্পেটিং তুলে সেখানেই ফেলে রাখা হয়েছে। তার উপর ড্রেনের মাটি, খোয়া, ইট, বালুসহ নির্মাণ সরঞ্জাম রাস্তায় এখনও পড়ে থাকায় চরম এবড়ো থেবড়ো অবস্থায় চলাচল দুরহ হয়ে পড়েছে। এপথে তুলশীরাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তুলশীরাম সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ সানফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
এব্যাপারে সাব ঠিকাদার জোবায়দুল ইসলাম মিন্টুর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, রাস্তার গর্ত ও ভাঙ্গার জন্য ইদুর দায়ী। আমরা ঠিকভাবেই কাজ করেছি। নিয়ম অনুযায়ী রোলার করা হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি ইদুর গর্ত করায় কিছু কিছু স্থানে সামান্য নিচু হয়েছে। আর একটি জায়গায় বৃষ্টির পানি ইদুরের গর্তে ঢুকে ড্রেনের মধ্যে ভেঙ্গে গেছে। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করছি। আপাতত বালু দিয়ে গর্ত ও ভাঙ্গা জায়গা পূরণ করা হবে। পড়ে সময় সুযোগ মত কার্পেটিং করে দিবো।
দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আব্দুল খালেক বলেন, আসলেই ইদুরের গর্তের কারণে ওই রাস্তাটিতে ডেবে যাওয়া বা ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঠিকাদারকে বলে গর্ত ও ভাঙ্গা স্থান মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।
সৈয়দপুর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, রাস্তায় গর্ত ও ভাঙ্গার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।





















