০২:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
কাজ করেন অফিসে বেতন নেন স্কুলে

বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলেও অনুপস্থিত আড়াই বছর দুই সহকারী শিক্ষক

দুই বছর ধরে বিদ্যালয়ে পাঠদান না করে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি কদমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দেবাশীষ রায় ও উত্তর বড়ভিটা মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু তাহের।

এতে করে ওই বিদ্যালয় দুটিতে পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের কমলমতী শিক্ষার্থী ও অবিভাবকগন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্দ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ অন্য শিক্ষকরা।

বাহাগিলি কদমতলি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুর্বনা আক্তার বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ৮১ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে । শিক্ষকের পোষ্ট রয়েছে ৬ টি। ৬ জন শিক্ষকই বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছিল। কিন্তু শারমীন আক্তার নামে একজন সহকারী শিক্ষিকা নীলফামারীতে পিটিআই ট্রেনিং নিচ্ছেন।

দেবাশীষ রায় নামে অন্য এক শিক্ষককে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে নিয়ে গেছে। তিনি গত এক বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। চারজন শিক্ষকের যদি কোন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে এত সংখ্যাক ছাত্রছাত্রীর পাঠদানে চরম বিঘ্নতা সুষ্টি হয়ে যায়।

উত্তর বড়ভিটা মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১১৮ জন। শিক্ষক সংখ্যা ৭ জন। এর মধ্য আবু তাহের নামে একজন শিক্ষক গত আড়াই বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। তিনি উপস্থিত না থাকার কারনে আমাদের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে তিনি আজ মঙ্গলবার থেকে বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। হঠাৎ করে আজকে যোগদান করল কেন ।

প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমার মনে হয় বিষয়টি সাংবাদিকরা অবগত হওয়ার কারনে তাঁকে স্কুলে ফেরৎ পাঠানো হতে পারে। ওই বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থী লিজা আক্তার, ফারুক হোসেন, সাধনা আক্তারসহ অইেশ শিক্ষার্থী বলেন, দেবাশীষ স্যার গনিত বিষয়ে আর তাহের স্যার ইংরেজি বিষয়ের ক্লাস নিতেন। স্যারেরা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারনে আমাদের গনিত ও ইংরেজি বিষয়ে পিছিয়ে পড়েছি।

কদমতলী গ্রামের বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, কদমতলী বিদ্যালয়টিতে বর্তমান পড়ালেখার মান বেশি ভালনা। কারন হিসাবে তিনি বলেন, বিদ্যালয়টিতে ৬ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও এক সঙ্গে দুইজন শিক্ষক না থাকার কারনে এমনটি হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ড. মোসা. মাহমুদা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার আগের অফিসার কদমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক দেবাশীষ রায় ও উত্তর বড়ভিটা মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষক তাহের মিয়াকে ডেপুটেশনে নিয়ে এস অফিসিয়াল কাজ করাত। আপনি আসার পর তাঁদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠাননি কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ভাই আজকে তাদেরকে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে যোগদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছি।

নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ডেপুটিশনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষককে এনে অফিসে কাজ করানো নিয়ম বর্হিভুত কাজ। এটা মোটেও ঠিক নয়। এ বিষয়ে তদন্ত করে ওই দুই শিক্ষককে স্ব স্ব বিদ্যালয়ে ফেরৎ পাঠানোর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। সাথে ছবি আছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নীলফামারীতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ইউনিটের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন-২০২৫ অনুষ্ঠিত

কাজ করেন অফিসে বেতন নেন স্কুলে

বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলেও অনুপস্থিত আড়াই বছর দুই সহকারী শিক্ষক

প্রকাশিত ০৭:০৯:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

দুই বছর ধরে বিদ্যালয়ে পাঠদান না করে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি কদমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দেবাশীষ রায় ও উত্তর বড়ভিটা মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু তাহের।

এতে করে ওই বিদ্যালয় দুটিতে পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের কমলমতী শিক্ষার্থী ও অবিভাবকগন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্দ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ অন্য শিক্ষকরা।

বাহাগিলি কদমতলি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুর্বনা আক্তার বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ৮১ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে । শিক্ষকের পোষ্ট রয়েছে ৬ টি। ৬ জন শিক্ষকই বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছিল। কিন্তু শারমীন আক্তার নামে একজন সহকারী শিক্ষিকা নীলফামারীতে পিটিআই ট্রেনিং নিচ্ছেন।

দেবাশীষ রায় নামে অন্য এক শিক্ষককে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে নিয়ে গেছে। তিনি গত এক বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। চারজন শিক্ষকের যদি কোন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে এত সংখ্যাক ছাত্রছাত্রীর পাঠদানে চরম বিঘ্নতা সুষ্টি হয়ে যায়।

উত্তর বড়ভিটা মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১১৮ জন। শিক্ষক সংখ্যা ৭ জন। এর মধ্য আবু তাহের নামে একজন শিক্ষক গত আড়াই বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। তিনি উপস্থিত না থাকার কারনে আমাদের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে তিনি আজ মঙ্গলবার থেকে বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। হঠাৎ করে আজকে যোগদান করল কেন ।

প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমার মনে হয় বিষয়টি সাংবাদিকরা অবগত হওয়ার কারনে তাঁকে স্কুলে ফেরৎ পাঠানো হতে পারে। ওই বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থী লিজা আক্তার, ফারুক হোসেন, সাধনা আক্তারসহ অইেশ শিক্ষার্থী বলেন, দেবাশীষ স্যার গনিত বিষয়ে আর তাহের স্যার ইংরেজি বিষয়ের ক্লাস নিতেন। স্যারেরা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারনে আমাদের গনিত ও ইংরেজি বিষয়ে পিছিয়ে পড়েছি।

কদমতলী গ্রামের বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, কদমতলী বিদ্যালয়টিতে বর্তমান পড়ালেখার মান বেশি ভালনা। কারন হিসাবে তিনি বলেন, বিদ্যালয়টিতে ৬ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও এক সঙ্গে দুইজন শিক্ষক না থাকার কারনে এমনটি হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ড. মোসা. মাহমুদা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার আগের অফিসার কদমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক দেবাশীষ রায় ও উত্তর বড়ভিটা মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষক তাহের মিয়াকে ডেপুটেশনে নিয়ে এস অফিসিয়াল কাজ করাত। আপনি আসার পর তাঁদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠাননি কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ভাই আজকে তাদেরকে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে যোগদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছি।

নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ডেপুটিশনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষককে এনে অফিসে কাজ করানো নিয়ম বর্হিভুত কাজ। এটা মোটেও ঠিক নয়। এ বিষয়ে তদন্ত করে ওই দুই শিক্ষককে স্ব স্ব বিদ্যালয়ে ফেরৎ পাঠানোর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। সাথে ছবি আছে।