রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে গোলচত্বরে সকাল ১০টা থেকে শত শত শিক্ষার্থী জমায়েত হন। এরপর কলেজ ক্যাম্পসে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানি ও আহতের ঘটনায় শোকাহত শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
আন্দোলনরত অবস্থায় শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে তাদের সঙ্গে যদি সরকারের প্রতিনিধি দল তাদের দাবি দাওয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলতে না আসে, তাহলে তারা উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করবে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমরা বুঝতে পারছি সরকার আমাদের কথা শুনবে না। আমরা সরকারকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিতে চাই, তারা যদি এর মধ্যে আমাদের সঙ্গে এসে কথা না বলে, তাহলে আমরা রাস্তা অবরোধ করবো। আমরা রাস্তা অবরোধ না করলে সরকার আমাদের কথা শুনবে না।
এর আগে, ‘বিচার চাই না, সন্তানের লাশ চাই’, ‘সঠিক লাশের হিসাব চাই’- এমন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে গোলচত্বরে সড়কের ওপর বসে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশ একাধিকবার তাদের সরে যেতে বললেও শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোনো সহিংসতা চাই না। কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। এত বড় দুর্ঘটনা ঘটলো- কেউ দায় নিচ্ছে না। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা এ অবিচারের বিচার চাই।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ৬য় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- নিহতদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ, আহতদের নির্ভুল তালিকা, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা, ক্ষতিপূরণ প্রদান, ঝুঁকিপূর্ণ প্লেন বাতিল, প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সংস্কার।
এর আগে, সোমবার দুপুর ১টার পর রাজধানীর উত্তরায় দুর্ঘটনায় পড়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে গিয়ে পড়ে এবং বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিমান ও স্কুল ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। যে ভবনে এটি বিধ্বস্ত হয় সেখানে বহু স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিল। যাদের বেশিরভাগই হতাহত হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপর উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। উত্তরাসহ আশপাশের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধার করা শুরু করে। পরে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। যার মধ্যে ২৫ জন শিশু বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। এছাড়া আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন শতাধিক শিক্ষার্থী ও আহত ব্যক্তি।
























