ভারত- বাংলাদেশ আরও “সৌহার্দ্য” বাড়বে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের নিত্য যোগাযোগ। আত্মীয়তা, চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে বাণিজ্য চলে দুদেশের মধ্যে। সবসময়ই দুদেশের নাগরিকের এই যাতায়াত সহজ করা নিয়ে আলোচনা চলে আসছে। সর্বশেষ, ২০২২ সালে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে কলকাতা-ঢাকা রুটের বাস পরিষেবা ‘সৌহার্দ্য’ পৌঁছায় ঢাকায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সফরে যোগাযোগ বাড়াতে নেওয়া আরও কিছু উদ্যাগ আরও “সৌহার্দ্য” বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সফর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, উভয়দেশ ‘শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিতকরণে একটি রূপকল্প ঘোষণা’ গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে আছে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চিকিৎসার জন্য যাওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে ই-ভিসা চালু এবং রংপুরে ভারতের নতুন সহকারী হাই কমিশন প্রতিষ্ঠা করা। এতে করে মুমূর্ষু রোগীদের ভিসা আগের চেয়ে দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ করা যাবে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে ভ্রমণ করা যাবে।

এছাড়া রাজশাহী ও কলকাতার মধ্যে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু, চট্টগ্রাম ও কলকাতার মধ্যে নতুন বাস পরিষেবা চালু এবং গেদে-দর্শনা এবং হলদিবাড়ি- চিলাহাটির মধ্যে দলগাঁও পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন পরিষেবা চালুর আলোচনাও আছে। দুইদেশের প্রধানরা মনে করছেন, এতে করে দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও বৃদ্ধি পাবে।

২০২২ এর ২৭জুন যখন কলকাতা-ঢাকা রুটের বাস পরিষেবা ‘সৌহার্দ্য’ চালু হয় পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর। বাসটি ঐতিহাসিক পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় আসার সুবাদে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় কলকাতা থেকে ঢাকায় পৌঁছে যান যাত্রীরা। যাত্রার সময় কমেছে প্রায় ৪ ঘণ্টা। এ এক অনন্য

অনুভূতি। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী বাস পরিষেবা বন্ধ ছিল। দুই বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ২০২২ এর জুন মাসে কলকাতার কিড স্ট্রিট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কলকাতা-ঢাকা সৌহার্দ্য বাস পরিষেবা শুরু হয়।

দুইদেশের সেই সৌহার্দ্য বাড়াতে সব রুটে সহজ যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে সুভাষ সিংহ রায় বলেন, আমাদের দেশের তিনপাশজুড়ে ভারতের সীমান্ত। ঐতিহাসিক কারণেই আমাদের মধ্যে কেবল রাস্ট্রীয় সম্পর্ক নয়। দুদেশের মানুষের সামাজিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। সেসব বিবেচনায় বিধিনিষেধ যত শিথিল করা যাবে তত ভালো, স্বস্তির।

আগামী দিনগুলোতে সেই চেস্টার অংশ হিসেবে বেশকিছু উদউদ্যোগ নেওয়ার পাশপাশি রাজনৈতিক যোগাযোগেও পরিবর্তন আসছে। যেকারণে কেবল সরকারদলীয় নয়, বিভিন্ন দলের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাইও ছিলো সফরের অন্যতম ইস্যু। ফিরে এসে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লি ছাড়ার আগে দুপুরে আমি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধানখারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করি। ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে, আমরা দুই দেশের বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করি। তারা বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

  • Related Posts

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    প্রভাষ আমিন চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে একটা দারুণ বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কার বিরুদ্ধে আন্দোলন, কেন আন্দোলন, দাবি কার কাছে- এসব ঠিক পরিষ্কার নয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে এক প্রজ্ঞাপন…

    Continue reading
    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    নিজস্ব প্রতিবেদক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে রবিবার (১৪ জুলাই) চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে না, তাহলে কি…

    Continue reading

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    মুক্ত মতামত

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও কি কোটা ব্যবস্থায় চাকরি পাওয়া যায়?

    কোটা পুনর্বহালে স্থিতাবস্থা মানে কি?

    প্রধানমন্ত্রীর সফরে পাঁচ মূলনীতির উন্নয়ন করতে চায় চীন

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি