নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফিকা আকতার জাহান বেবীর স্বামীর মৃত্যুর পর মেয়র হয়ে পৌরসভার কোটি কোটি টাকা লোপাট করে গা ঢাকা দিয়েছেন। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে লাপাত্তা হয়ে যান তিনি। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মেয়র দুর্নীতি ও স্বেচারিতা চালিয়ে যান। অন্তবর্তিকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর মেয়রদের অপসারণ করা হয়। তার বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০২০ সালে ১২ ডিসেম্বর তার স্বামী সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আখতার হোসেন বাদল মৃত্যুতে তার ভাগ্য খুলে যায়। ২০২১ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন। ১৯ এপ্রিল শপথ গ্রহণের পর থেকেই দুর্নীতি ও স্বেচ্ছারিতায় জড়িয়ে পড়েন।
তার বিরুদ্ধে ১৪ কাউন্সিলর সকল সেবামূলক খাত ও আয়ের উৎসগুলো থেকে অনিয়ম ও অর্থ লোপাট করার অভিযোগ করেন। এবং তার বিরদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন, সাংবাদ সম্মেলনসহ দু-বছর ধরে নানা কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন করেন। পরিষদের নির্বাচিত কাউন্সিলরদের অভিযোগকে তোয়াক্কা না করে তিনি নিজেকে নিদোর্ষ দাবী করেন।
সাবেক মেয়র বেবি কাউন্সিলরদের বলেন, মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মেয়র বানিয়েছেন। জবাবদিহীতা করলে আমি তাঁর কাছে করব। তোমরা পাশে থাকলে থাক আর না থাকিলে নাই। আমি আমার মত চলব।
মেয়রের স্বেচ্ছাচারিতা শুধু পৌরসভায় নয় তার স্বামির পরিবারের প্রতিও শুরু করে। নির্বাচিত হওয়ার পর, শহরের নতুন বাবুপাড়ায় তার স্বামির প্রায় ১০শতক জায়গায় একটি ২য় তলা ভবন। সে ভবন থেকে তার স্বামীর বড় বোন ও ছোট্ট ভাইকে বের করে দিয়ে নিজ দখলে নিয়ে নেয়। তার এই স্বৈরাচারীতার প্রতিবাদ করেন এলাকাবাসী, দলীয় লোকসহ সৈয়দপুর পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর পৌরসভায় মোট মঞ্জুরিকৃত পদ রয়েছে ১৫৮টি। সেখানে কর্মরত রয়েছে মাত্র ২৯ জন। ১৫৬টি পদই শূন্য। পৌর মেয়র শুণ্য পদ পূরণের ব্যবস্থা না নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ৪শত ৫০ জনকে মাস্টার রোলে নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় কোটি টাকা। এছাড়া প্রতিদিন পৌরকর আদায় করলেও তা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা হত না। ২০২৩ সালের জুলাই মাসের পর থেকে টোল আদায় রেজিস্টারে কোন হিসেব রাখা হয়নি। এতে মেয়র টোলের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া এল আর ফান্ডে রাখা কোটি টাকা ব্যাংক হিসেবে জমা না দিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
উল্লেখিত অভিযোগ দিয়ে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রাণালয় পর্যন্ত মেয়রের বিরুদ্ধে চিঠি চালাচালি করেন। তাতেও কোন ফল না আসায় কাউন্সিলরবৃন্দ রংপুর বভিাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নিতীর অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বছরের গত ৩০ মে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো: জাকির হোসেন সৈয়দপুর পৌরসভা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে পৌরসভার বিভিন্ন শাখার রেজিষ্টার খাতা পর্যবেক্ষন করলে মেয়রের অনিয়ম ও দুর্ণীতির প্রমান মিলে। তবে এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এমনকি প্রকাশ করাও হয়নি ওই পরিদর্শন প্রতিবেদন। আওয়ামী লীগের মেয়র হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, এমন অভিযোগ করেন কাউন্সিলরবৃন্দ।
সৈয়দপুর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নুর-ই -আলম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি আমরা জানি। সরকারি ভাবে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। নির্দেশনা আসলেই তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ-২০২৫ সৈয়দপুরে দুই দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলার সমাপণী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলা সমাপ্ত হয়েছে। সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজনে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের তত্ত্বাবধানে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি…