নীলফামারীতে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ২ লাখ ৭৬ হাজার ২০১টি পশু

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নীলফামারীতে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ২০১টি পশু। গরু পালনকারী ও খামারিদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন খামারিদের কাছে আসছেন পশু ব্যবসায়ীরা। তবে হাটবাজার জমতে আরও কয়েক দিন দেরি হবে বলে জানান খামারি ও গৃহস্থরা। প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাস্থ্যসম্মত গরু ছাগল মোটা-তাজা করেছেন বলে জানান খামারিরা।
জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে জানা যায়,এবার কোরবানির ঈদের জন্য জেলায় বাণিজ্যিক ও পারিবারিক খামার রয়েছে ৩০ হাজার ৯৭২টি। এখানে বিভিন্ন জাতের গরু আছে,শাহীওয়াল,অষ্ট্রেলিয়ান, ফ্রিজিয়ান,ক্রোস ও মুন্ড। ছাগলের মধ্যে রয়েছে হারিয়ানা, তোতাপুড়ি, রামছাগল ও দেশি জাতের ছাগল। এসব খামারে গরু-ছাগল রয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ২০১টি। এ বছর জেলায় গরুর চাহিদা ১ লাখ ৪৩ হাজার ১০৯টি, যা চাহিদার চেয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯২টি গরু-ছাগল বেশি পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ৪৮ হাজার ৩৮৫টি, বলদ ৩ হাজার ৮৪৯টি, গাভী ২৩ হাজার ৫৯৮টি, মহিষ ৩৩টি, ছাগল ১ লাখ ৮৬ হাজার ১৫১টি,ভেড়া রয়েছে ১৪ হাজার ১৯৪টি। এসব মজুদ রয়েছে গৃহস্থ ও খামারিদের ঘরে।
সরেজমিনে গিয়ে সদরের খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের গৃহস্থ গোলাম মোস্তফা বলেন,এক বছর আগে দুটি ষাড় গরু এক লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে নেই। গরুকে খাবার হিসেবে খর,কাঁচা ঘাস, খৈল, ভুট্টা এবং ধানের কুড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে বড় করেছি। গরু ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে দুইটি গরু দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা দাম হাঁকিয়েছেন। তবে আশা করছি আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হবে গরু দুটি। যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে আমার প্রায় এক লক্ষ টাকা লাভ হবে।
সদরের চওড়া ইউনিয়নের গরু খামারি রাশেদ ইসলাম বলেন, কোরবানির জন্য ২২টি ষাঁড় দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করি। গরুগুলো অনেক বড় ও মোটাতাজা হয়েছে। ইতিমধ্যে গরু ব্যবসায়ীরা খামারে এসে দরদাম করছেন। বর্তমান বাজার অনুযায়ী আমার প্রায় ৭-৮ লক্ষ টাকা লাভ হবে। বাজারে দেশি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় এবার লাভের মুখ দেখা যাবে। এবার ভারতীয় গরু ছাড়া আমাদের দেশি গরু দিয়ে কোরবানির হাট-বাজারগুলো ভরে যাবে।
নীলফামারী জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.মো.সিরাজুল হক জানান,এবার জেলায় চাহিদার চেয়ে প্রায় দ্বিগুন কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও বিক্রি করতে পারবেন পশু। এবছর প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণের জন্য, উপজেলাভিত্তিক তালিকাভুক্ত খামারিদের সারা বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

  • Related Posts

    আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

    নীলফামারীর ডিমলায় ডিমলা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শনিবার রাতে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট ২০২৫ এর ট্রফি উন্মোচন ও উদ্বোধন করেন ডিমলা উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও আরাফাত…

    Continue reading
    নীলফামারীতে কালের বির্বতনে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন ঐতিহ্য মৃৎশিল্প

    কালের বির্বতনে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। নীলফামারী সদর উপজেলা ও সৈয়দপুর উপজেলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প দুইটি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও নানাবিধ সমস্যার কারণে আজ বিলুপ্তির পথে। এক সময়ে মাটির জিনিসপত্র…

    Continue reading

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    মুক্ত মতামত

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও কি কোটা ব্যবস্থায় চাকরি পাওয়া যায়?

    কোটা পুনর্বহালে স্থিতাবস্থা মানে কি?

    প্রধানমন্ত্রীর সফরে পাঁচ মূলনীতির উন্নয়ন করতে চায় চীন

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি