নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেললাইনের ওপর বসানো হচ্ছে গরম কাপড় ব্যবসা। শহরের ১নং রেল ঘুমটি থেকে ২নং রেল ঘুমটি পর্যন্ত রেললাইনের দুই ধার দখল করে এক শ্রেণীর লোক গড়ে তুলছেন তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তাদের ব্যবসার পরিধি বাড়াতে বর্তমানে পিআইডব্লিউ অফিস পর্যন্ত রেললাইন দখল হয়ে গেছে। প্রতিদিন সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকাসহ রাজশাহী ও খুলনা চলাচল করে বেশ কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ওই সকল দোকানে থাকে লোকজনের ভীড়। ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে ট্রেন দুর্ঘটনা। হতে পারে মানুষের প্রাণহানি। ইতঃপূর্বে বেশ কয়েকজন লোক ট্রেন দুর্ঘটনায় ওই লাইনপাড়ে মারা যায়। তারপরও টনক নড়েনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। সরকারি রেললাইন দখল করে ব্যবসা চলে আসলেও দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের যেন কোন মাথা ব্যথা নেই। মাঝে মধ্যে চালানো হয় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। রেল লাইনের দু’ধার ঘেষে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করা হয় উচ্ছেদ। কিন্তু সকালে উচ্ছেদ করা হলে বিকেলে আবার সেখানে স্থাপনা গড়ে উঠে। বিশেষ করে রেলওয়ের গেটকিপার অফিস পাঁচমাথা মোড় ঘরের চারপাশ যেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভরা। সামনে পেছনে রকমারি ব্যবসার কারণে একদিকে লোহা পেটানোর বিকট শব্দ অপরপাশে ফল ব্যবসায়ীদের চিৎকার বিষিয়ে তুলেছে ওই এলাকা। ফলে ট্রেন আসার শব্দটুকুও অনেক সময় গেটম্যান অনুভব করতে পারেন না। যার ফলে কয়েক মাস পূর্বে সেখানে গেট খোলা অবস্থায় চলে যায় ট্রেন। অভিযোগ রয়েছে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিদিন ভাড়া তোলা হয়ে থাকে। আসলে এসকল আদায়কৃত টাকা কার পকেটে যায় তা জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। এক নম্বর রেলঘুমটি পোস্ট অফিস মোড়ে যেখানে রিক্সা ভ্যান, দাঁড়াতো সেখানে দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ফলমুলের দোকান, পাশে রাস্তা দখল করে বসেছে পুরাতন কাপড় ও আখের রসের দোকান। ওই পথে আসা রেললাইন দখল গড়ে উঠেছে লন্ড্রি দোকান, নাপিতের দোকান, বালতি কারখানা, ভাঙ্গারী লোহার দোকান ও হোটেল। আরও একটু এগিয়ে স্বর্ণকার পট্টি হয়ে গড়ে উঠেছে প্লাষ্টিক দোকান, লোহা লস্কর দোকান, গো-মাংস দোকান, মুদি দোকান। দুই নম্বর রেলঘুমটি পাড় হয়ে দু’ধারে বসেছে কাঠের দোকান,ফলমুল আড়ৎ, পান দোকান। মজার ব্যাপার রেল লাইন এর মধ্যখানে ঝুলন্ত ফলের দোকান। এগুলো দেখে মনে হয় রেলওয়ে প্রশাসন নেই। ঝিমিয়ে পড়েছে রেলওয়ে প্রশাসনের কার্যক্রম। ফলে প্রতিদিন ভূমি দস্যুরা নিজ দখলে নিচ্ছে রেলওয়ের সম্পত্তি। বিশেষ করে রেললাইন ফুটপাত দখল করে দোকান বসায় যে কোন সময় দুর্ঘটনার আশংকা। এ ব্যাপারে উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) সুলতান মৃধা জানান, আমি খুবই অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছি। সুস্থ্য হলে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।
প্রায় শতাধিক অবৈধ দোকান থেকে প্রতিদিন আদায় করা হয় টাকা। এ টাকাগুলো কোথায় যায় সে ব্যাপারে তিনি কোন জানেন না। কারা টাকা তোলেন তাও এড়িয়ে যান তিনি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ওসি সাকিউর রহমান জানান, এটি আমার দায়িত্বের বাইরে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রতন জানান, এটি দেখার দায়িত্ব উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) সুলতান মৃধার। তিনি কেন এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছেন না তা আমার জানা নেই।
তবে ধীরে ধীরে দখল হয়ে যাচ্ছে রেললাইন। এ বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফারহাত আহমেদ এর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন শহরের সচেতন মহল।