নীলফামারীর ডোমারে বিয়ের ৩মাসের মধ্যে পল্লবী রায়(২৩) নামে এক নববধূঁর ঝুলন্ত মরহেদ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। নিহতের বাবাসহ পরিবারের আত্মীয়রা দাবী করছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে।
বুধবার(৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নিমোজখানা বাবুপাড়া এলাকার প্রামানিকের বাড়ীতে ঘটনাটি ঘটে। নিহত পল্লবী রানী ওই এলাকার প্রামানিক রায়ের ছেলে ও কালিগঞ্জ(টোলের ডাঙ্গা) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিশ্বদেব রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী। ও একই এলাকার কাঠালতলী এলাকার গৌরাঙ্গ রায়ের মেয়ে এবং নীলফামারী সরকারী কলেজের অর্নাস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল।
পল্লবী রায়ের পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রথম বিয়ের ৫বছর বয়সী অন্যান্য নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। প্রথম বিয়ে বিচ্ছেদের পর সাবেক প্রেমিক বিশ^দেব রায়কে ৩মাস আগে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। পল্লবী রায়ের মৃত্যুর পর তার স্বামী ও শ^শুরকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
নিহতের বাবা গৌরাঙ্গ রায় বলেন, আমার মেয়ের সাথে গত ৩মাস আগে বিয়ে হয় শিক্ষক বিশ্বদেবের। এর আগে বিশ^দেবের কাছে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়তো। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানার পর আমি আমার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেই। বিশ্বদেবও অন্য জায়গায় বিয়ে করে।আমার মেয়ের আগের সংসারে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বিশ্বদেব আমার মেয়ের জামাই বাড়ীতে গিয়ে তাদের মধ্যে ডিভোর্স ঘটায়। ডিভোর্সের পর থেকেই আমার মেয়ে ও তার মেয়ে অনন্যাকে নিয়ে আমার বাড়ীতে থাকতো। আমার বাড়ীতে অবস্থান কালেই আমার মেয়েকে ৩মাস আগে পালিয়ে বিয়ে করে বিশ্বদেব। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ে তার স্বামীর বাড়ীতে রয়েছে। সেখানে বিশ্বদেবের আগের স্ত্রী থাকে।
বুধবার সকালে আমার ভাগিনা ফোন দিয়ে জানায় চেয়ারম্যান রিমুন ফোন দিয়ে বলেছে পল্লবী ফাঁস দিয়েছে। ঘটনা শুনার পর সেখানে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে টিনের চালাঘরের ভিতরে গলায় ওড়না পেচিয়ে মাটিতে পা লাগানো অবস্থায় ঝুলে আছে। কিভাবে এই ঘটনা ঘটেছে জানতে চাইলে বিশ্বদেবের পরিবার টালবাহানা করতে থাকে। আমি আসার পর থেকেই বিশ্বদেবের কোন খোজ পাইনি। সে পালিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন আমার মেয়েকে মেরে ঘরের মধ্যে তারা ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা প্রচার করছে।
পল্লবীর সতীন জুই রায় বলেন, সকালে বাসন মাজার পর পল্লবী এসে বলে দিদি শরীরটা খারাপ লাগছে ভাত কিভাবে রান্না করবো। তখন আমি তাকে বলি তুই রেষ্ট নে আমি ভাত রান্না করবো।এই বলে সে ঘরের ভিতর চলে যায়। ভাত রান্না হওয়ার পর আমার স্বামী পল্লবীকে ডাকতে তার ঘরে গিয়ে দেখে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের স্বড়ের সাথে সে ঝুলিয়ে রয়েছে। এসময় আমার স্বামী চিৎকার করলে আমরা সকলেই গিয়ে দেখতে পাই সে ঘরের মধ্যে আত্মহত্যা করেছে। তবে কি কারনে সে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি তারা বলতে পারছেনা।
পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ডোমার সার্কেল এর সহকারী পুলিশ সুপার আলী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ডোমার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাহমুদ উন নবী পল্লবীর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। মরদেহের তদন্ত রিপোর্ট আসলেই মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।