নীলফামারী জলঢাকায় হাটবাজার উন্নয়নের নামে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দাপটে বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি প্রায় দেড় যুগ অসহায় দরিদ্র এক নারী ব্যবসায়ী। তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে মহিলা মার্কেট বাজারে একটি পাদুকার দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন তিনি। ওই অসহায় নারীর দোকানটিতে স্থানীয় এক প্রভাবশালী নব্যনেতার নীলচক্ষু দৃষ্টি পরে। ফলে বাজারের দোকান সংস্কারের নাম ভাঙ্গিয়ে ওই নারীর একমাত্র রুটিরুজির সম্বল দোকানঘরটি ভাংচুর করে। যথারীতি নামেমাত্র বাজারের দোকান সংস্কার হলেও ভুক্তভোগী ওই নারী বরাদ্দ পায়নি দোকানঘর। কর্মবিহীন হয়ে পড়া ওই নারী স্থানীয় প্রসাশনসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি। প্রভাবশালীদের এমন কান্ডজ্ঞানহীনতা ও কর্মপরিকল্পনায় বর্তমানে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই্ অসহায় নারী। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি উপজেলার টেংগনমারী বাজারে। জানা যায়, বিগত ২০০৪ সালে তৎকালীন অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে অসহায় নারী আকলিমা বেগম ( ৪৫ ) কে টেংগনমারী বাজারের নীলফামারী রোড সংলগ্ন স্থানে বর্তমানে জুয়েলের পানের দোকান ও হালিমুল ইসলামের মুদী দোকানের মধ্যবর্তী স্থানে ছিল ওই আকলিমার পাদুকার ব্যবসা। কিন্তু ২০১৯ সালে স্থানীয় এক নব্যনেতা জেলা ও উপজেলা প্রসাশনকে ম্যানেজ করে হাটবাজার উন্নয়নের কথা বলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীদের কর্মস্থল দোকানপাট ভেঙ্গে দেয়। পরে নামেমাত্র বাজারের উন্নয়নকাজ হলেও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা বাদ পরে দোকানঘর বরাদ্দ থেকে। যার সংখ্যা প্রায় ১৫/২০ জনেরো বেশী। আকলিমা বেগম গণমাধ্যমে অভিযোগ করে বলেন, আমার মত অনেকে দোকান পায়নি। পেয়েছে তারা-যারা লক্ষ লক্ষ টাকা নেতাদের দিতে পেরেছে। আকলিমা আরো বলেন, ইউনিয়ন ভুমি অফিস, এসিল্যান্ড, ইউএনও স্যার, ডিসি স্যার, ইউনিয়ন হাট ইজারাদারসহ এমন কোন জায়গা নেই যে, আমি সেখানে আবেদন করি নাই। আমার টাকা নাই, এ জন্য আমি দোকান পাইনি। ডিসি স্যার-ইউএনও স্যারকে চিঠি দ্বারা জানিয়েছে আমাকে দোকান দেওয়ার জন্য। তিনি চিঠি দিয়ে সার্বিক দিক দেখার নির্দেশ দিয়েছেন এসিল্যান্ড স্যারকে। এসিল্যান্ড স্যার দায়িত্ব দেন সার্ভেয়ার সাহেবকে। এভাবে চিঠির ছড়াছড়ি চলছে কিন্তু গত ৫ বছরেও আমাকে তারা দোকান বরাদ্দ দেয়নি। আমার জায়গায় দোকান দিয়েছে নব্যনেতার নিকটাত্মীয়দের। অথচ ওই জায়গায় আমি দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর ধরে ব্যবসা করেছি। দরিদ্র হওয়ায় আমাদের বিচার নাই। আকলিমা জানান, সার্ভেয়ার সাহেবকে ডিসি স্যার, ইউএনও স্যার একাধিক চিঠি দিয়েছে আমাকে একটু জায়গা দেওয়ার জন্য কিন্তু কারো কথায় তিনি কর্নপাত করেনি। সুবিধাজনক ব্যক্তিকে দোকানঘর বরাদ্দ দিয়েছেন। স্থানীয় হাট ইজারাদার শাহীন জানান, আকলিমা বেগম বিগত ২০০৪ সাল থেকে ওই জায়গায় ছোট্ট পরিসরে নানাবিধ ব্যবসা করেছেন। হাটবাজার উন্নয়নের নামে তার দোকানটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। যারা পূর্বে ছিল সবাই দোকান বরাদ্দ পেলেও কিন্তু কি রহশ্যজনক কারনে আকলিমা বঞ্চিত হলো বুঝতে পারছি না। অন্যদিকে বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,
আকলিমা বেগমের দোকানেই ছিল ওই জায়গায়। কেন পেলো জানতে চাইলে নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীদের কথাই শেষ কথা। প্রভাবশালীদের সঙ্গে আতাত না করায় আকলিমা বঞ্চিত হয়েছে। তবে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে একটি তদন্তের জন্য চিঠি এসেছে আমি সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠাবো। আপনারাও যা শুনেছেন আমিও তাই শুনেছি আকলিমা ওই জায়গাতেই দোকান করেছিলেন। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার রাব্বিল আল-আমীন তারেক মুঠোফোনে বলেন, আমার একতিয়ার বহির্ভূত। ইউএন স্যার এসিল্যান্ট স্যারের দায়িত্ব, উনারা না করলে আমার দারা সম্ভব না। সবচেয়ে ভাল হয় ইউএনও স্যারের সাথে যোগাযোগ করলে কাজটি হতে পারে। একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, বিষয়টি নিয়ে কথা হয়নি উপজেলা
নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে।