আন্দোলন দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই

আন্দোলন দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না।

সোমবার (৩১ জুলাই) জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক-২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটু আন্দোলন সংগ্রাম দেখলে ভয় পাবেন না; ভয় পাওয়ার কিছু নেই। জনগণ যতক্ষণ আমাদের সঙ্গে আছে। যারা আন্দোলন করতে চায়, জ্বালাও-পোড়াও করতে চায়, জ্বালাও-পোড়াও করাটা আমরা সহ্য করবো না। সেটা কখনই মেনে নেয়া যাবে না।

তিনি আরো বলেন, আন্দোলন-সংগ্রাম যাই করুক তাতে আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমরা আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেবো না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা মনে রাখবেন আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা আমাদের সমর্থন করেনি, তাদের মনের বৈরিতা কিন্তু এখনো কেটে যায়নি। কিন্তু সেটা অতিক্রম করেই কিন্তু আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, কারো মুখ গোমরা আমি দেখতে চাই না। সবাইকে হাসিখুশি দেখতে চাই। যেটুকু মানুষের জীবনে সমস্যা আসে কিন্তু সেটা অতিক্রম করবার মতো মনোবল দরকার হয়। শক্তি দরকার হয়। সেই শক্তি নিয়ে চললে বাংলাদেশ ইনশাল্লাহ এগিয়ে যাবে। সেটাই আমি বিশ্বাস করি।

নিজেকে জনগণের সেবক মনে করেন জানিয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের টাকায় বেতন-ভাতা, জনগণের টাকায় কিন্তু সব। কাজেই সেই জনগণের সেবা করাটা কিন্তু, আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটা আমারও এবং আপনাদের সকলের দায়িত্ব। কাজেই জনগণের পাশে থাকেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন তিনি এদেশের জনগণের সেবক। আমিও তাই মনে করি প্রধানমন্ত্রিত্ব বড় কথা না আমি জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। কাজেই জনগণের সেবক হিসেবেই আমি নিজেকে মনে করি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- সরকারি কর্মচারী ভাইয়েরা আপনাদের জনগণের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। জাতীয় স্বার্থকে সব কিছুর উর্ধ্বে স্থান দিতে হবে। এখন থেকে অতিতের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব পরিবর্তন করে নিজেদেরকে জনগণের খাদেম বলে বিবেচিত করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন-অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

স্বাধীনতার সুফল প্রত্যেক ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার প্রত্যয় পুর্নব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি, বিজয়ী জাতি আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবো। কেন মাথা নিচু করে চলবো। সেই প্রত্যয় নিয়ে বাবা-মা, ভাই সব হারিয়ে সেই ব্যথা, বেদনা বুকে নিয়েও আমার একটাই লক্ষ্য এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। আমরা ব্যর্থ হতে দিবো না। স্বাধীনতার সুফল সব মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবো।

সরকারের দুটি প্রতিষ্ঠান এবং ২৮ জন কর্মকর্তাকে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ প্রদান করা হয়।

দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পলিসি এবং প্রশাসনিক পদ্ধতি পুর্ণগঠন ক্যাটাগরিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও জনকল্যাণে গবেষণা ক্যাটাগরিতে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট এবং হাসপাতাল।

অনুষ্ঠানে অপরাপর বক্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।

  • Related Posts

    ১৭ বছর পর কারামুক্ত হলেন লুৎফুজ্জামান বাবর

    সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর কারামুক্ত হয়েছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনি কারাগারে বন্দি ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ২টায় কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হন তিনি। বিষয়টি…

    Continue reading
    নীলফামারীতে তারেক রহমানের নির্দেশে শীতার্তদের পাশে জেলা বিএনপি। 

    বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নীলফামারীতে অসহায় দুঃস্থ শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছে জেলা বিএনপি। শনিবার (১১ ডিসেম্বর) জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে…

    Continue reading

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    মুক্ত মতামত

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও কি কোটা ব্যবস্থায় চাকরি পাওয়া যায়?

    কোটা পুনর্বহালে স্থিতাবস্থা মানে কি?

    প্রধানমন্ত্রীর সফরে পাঁচ মূলনীতির উন্নয়ন করতে চায় চীন

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি