আগাম আলু চাষের ভান্ডার উত্তরের সিমান্ত ঘেঁষা জেলা নীলফামারী। এরমধ্যে অন্যতম সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের কচুকাটা গ্রাম। গ্রামটি আলু চাষে খ্যাত হওয়ায় আলু গ্রাম নামে পরিচিতি লাভ করেছে। এবার এডোম চায়না জাতের ধান কেটে মাঠ জুড়ে সেভেন আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়,জেলায় এবার সাত হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত তিন হাজার ৫০১ হেক্টর জমিতে আগাম সেভেন জাতের আলু রোপন চলছে। তবে গত বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাত হাজার ৫২০ হেক্টর। সেই অনুযায়ী এবার অতিরিক্ত দুইশত ৮০ হেক্টরে জমিতে আলুর চাষ হচ্ছে।
এসব ধান কাটা মাড়াই শেষে ওই জমিতে সেভেন জাতের আলু রোপণ চলছে। এ জন্য বীজ সংগ্রহ, জমি প্রস্তত, সার প্রয়োগসহ আলু চাষে ব্যস্ত সবাই। বিশেষ করে কচুকাটা গ্রামের উত্তর পাড়া, কচুকাটা বন্দর পাড়া, পূর্ব পাড়া, ভরট পাড়া, গুড়গুড়ী, চেয়ারম্যান পাড়া, নোহালীর ডাঙ্গা ও চৌধুরী পাড়ায় আগাম আলু রোপণকে ঘিরে কৃষকের মাঝে খুশির জোয়ার বইছে। কচুকাটা গ্রামটি এখন আলুর গ্রাম নামে পরিচিতি পেয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দ্বিগুন লাভের আশায় মাঠে মাঠে চলছে এখন আলু রোপণ ও জমি প্রস্তুতের কাজ। কেউবা জমি তৈরী করছেন, আগাছা পরিস্কার, বীজ সংগ্রহ ও সার প্রয়োগ নিয়ে ব্যস্ত তারা। দম ফেলার ফুরসত নেই।
কচুকাটা বন্দর পাড়া গ্রামের আলু চাষি বজলুর রশিদ বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপন করেছি। তিনি বলেন, সার, বীজ, পরিবহন, লেবার ও ছত্রাক নাশকসহ আলু ঘরে তোলা পর্যন্ত মোট খরচ হবে প্রায় এক লাখ টাকা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ওই দুই বিঘায় আলু উৎপাদন হবে প্রায় চার হাজার কেজি। বাজার দর ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হলে লাভ হবে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা। আশা করি, খরচ বাদে আমার লাভ হবে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা।
একই গ্রামের আলু চাষি আব্দুস সালাম বলেন, গতবারের চেয়ে এবার চার বিঘা জমিতে সেভেন আলু চাষ করছি। এখানকার মাটি উর্বর হওয়ায় আলু চাষের জন্য খুবেই উপযোগি। চায়না জাতের আগাম ধান কেটে আলু রোপন করে থাকি। এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সবাই কোমড় বেঁধে আলু চাষে ঝুঁকছে। তিনি বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে আগাম আলু চাষ একটি লাভজনক ফসল। ফলন ভাল হলে আমার চারবিঘায় খরচ বাদে লাভ হবে প্রায় চার লাখ টাকা।
চেয়ারম্যান পাড়ার আলু চাষী আবু কালাম চারবিঘা ও আব্দুস সালাম পাঁচ বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপন করছে। তারা জানান, যদি আবহাওয়া ভাল থাকে ধান বা পাটের চেয়ে সেভেন আলু বিক্রি করে দ্ধিগুন লাভ করা যাবে। তাই আলু রোপনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে কচুকাটা গ্রামে।
এলাকার আলু চাষি আশরাফুল ইসলাম জানান, সেভেন জাতের আলু তিন বিঘা জমিতে লাগিয়েছি। এ এলাকার মাটি উঁচু এবং বালু মিশ্রিত বেলে দো-আঁশ হওয়ায় বন্যায় আলুর ক্ষতি হয় না। ফলনও ভাল হয়। উৎপাদিত আলু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চড়া দামে (৮০-১০০ কেজি) বিক্রি করে দ্বিগুন লাভ হয়। ধান, পাট, ভুট্টা. গম, এসব ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম আলু চাষের বিকল্প নাই।
ওই ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই অঞ্চলের মাটি দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ তাই আলু চাষের জন্য উপযোগি। এখানে ১০ অক্টোবর থেকে আলু রোপন শুরু হয়েছে। গ্রামটিতে ৩০ হেক্টর (২২৫ বিঘা) জমিতে আলুর চাষ হচ্ছে। এসব আলু ডিসেম্বরের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে কৃষক ঘরে তুলতে পারবে। বাজার দর ৬০-৭০ টাকার মধ্যে থাকলে বিঘায় যা খরচ হয় তার দ্ধিগুন লাভ হবে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠনো সম্ভব।
সদর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা বকুল ইসলাম বলেন, সদরে দুই হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আগামজাতের আলু চাষের টার্গেট ধরা হয়েছে। তার মধ্যে কচুকাটায় ৩০ হেক্টর জমি আলু চাষের আওতায় রয়েছে। এখন পর্যন্ত এক হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে সেভেন আলু রোপন করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সদরের কচুকাটা গ্রামের মাটি উর্বর হওয়ায় আগাম আলু চাষের জন্য খুবেই উপযোগি। ওই গ্রামে ৩০ হেক্টর অর্থাৎ ২২৫ বিঘা জমিতে আলুর চাষ হচ্ছে। এছাড়াও, এ বছর জেলায় ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আশা করি, গত বছরের চেয়ে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
ঈশান আর্ক এশিয়া স্পোটর্স খেলতে শ্রীলঙ্কা যাচ্ছে
স্থপতি নটরডেমিয়ান ও বিকেএসপির প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ক্রিকেটার মো: শাহরীন আলম শাহ্ ঈশান আর্ক এশিয়া স্পোটর্স শ্রীলঙ্কা-২০২৫ (ভারত,পাকিস্থান,বাংলাদেশ,শ্রীলঙ্কা) খেলতে আগামী ১৭ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার যাচ্ছে। ইনষ্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট বাংলাদেশ (আইএবি) ক্রিকেট স্কোয়াডে…