সংসদ সদস্য হত্যা: ঘটনাআড়াল করে জোর করে ভারত বিরোধীতা বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন! এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক বন্ধু ও চরমপন্থি নেতা আমানুল্লাহ আমানকে। কলকাতায় বসে হত্যার চূড়ান্ত ছক এঁকে বাংলাদেশে চলে আসে শাহীন। পরে আমানসহ ছয় জন মিলে এমপি আজিমকে প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে।

বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ তদন্তকারী কর্মকর্তারা সিসিটিভি ফুটেজ ও জড়িতদের বয়ান থেকে এসব তথ্য পেলেও এর আগে দুপুরেই বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা কি এখনও এই সরকারের সক্ষমতা দেখেন—আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে? বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক নয়, তাদের তথাকথিত একজন সংসদ সদস্য বিদেশে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেলেন… তার কোনও খবর দিতে তারা পারলেন না। না পারলো বাংলাদেশ সরকার, না পারলো তাদের বন্ধুরাষ্ট্র ভারত। তাহলে আমরা কী মনে করবো?’

তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন বন্ধু রাষ্ট্রে গিয়ে নিরাপত্তা নাই। আপনাদের যদি শত্রু রাষ্ট্র হয়, সেখানে সালাউদ্দিন এতদিন নিরাপদে কেমন করে আছেন। তাকে তো কেউ হত্যা করেননি। তার জীবনে তো নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি, জীবনের কোনও হানি ঘটেনি। এই ধরনের অপবাদ কেন দিচ্ছে বন্ধু রাষ্ট্রকে?

মূল ঘটনা জানার চেস্টা না করে ভারতকে জড়িয়ে এধরনের মন্তব্য করা একেবারেই অদক্ষ রাজনৈতিকের কাজ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

কলকাতায় নিখোঁজ থাকা এমপি আনোয়ারুল আজিম সম্পর্কে ভারত সরকার কেন বাংলাদেশকে তথ্য দেয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শুধু সাধারণ নাগরিক নয়, আওয়ামী লীগের ‘কথিত’ সংসদ সদস্যরাও সরকারের বন্ধুরাষ্ট্রের (ভারত) কাছে নিরাপদ নয়। 

তার এই দাবি একেবারেই সত্য নয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ মিন্টো রোডের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড। এটি পারিবারিক, আর্থিক, নাকি এলাকার কোনও দুর্বৃত্তকে দমন করার জন্য হয়েছে, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা নিবিড়ভাবে ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে কাজ করছি।

এমপি আনারের রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা বলছেন, ঘটনা আড়ালে রেখে ভারতকে সম্পৃক্ত করে এভাবে দায়ী করতে চেস্টা করার বিএনপির এই রাজনীতি আজকের না। বাংলাদেশের থেকে পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারীরা গিয়ে ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তথ্য প্রমান পাওয়া যাচ্ছে। দুইদেশেপ প্রশাসন মিলে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দিবে সেটাই এখন আমাদের দাবি। বিএনপি ভারত বয়কটের রাজনীতি এার সঙ্গে মিলানোর অপচেস্টা করবে না সেই প্রত্যাশা রইলো।

  • Related Posts

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    প্রভাষ আমিন চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে একটা দারুণ বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কার বিরুদ্ধে আন্দোলন, কেন আন্দোলন, দাবি কার কাছে- এসব ঠিক পরিষ্কার নয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে এক প্রজ্ঞাপন…

    Continue reading
    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    নিজস্ব প্রতিবেদক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে রবিবার (১৪ জুলাই) চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে না, তাহলে কি…

    Continue reading

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    মুক্ত মতামত

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও কি কোটা ব্যবস্থায় চাকরি পাওয়া যায়?

    কোটা পুনর্বহালে স্থিতাবস্থা মানে কি?

    প্রধানমন্ত্রীর সফরে পাঁচ মূলনীতির উন্নয়ন করতে চায় চীন

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি