‘শ্রমিক মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নীলফামারীতে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান মে দিবস পালিত হয়েছে।
বুধবার (১ মে) দিন ব্যপি দিবসটি উপলক্ষে সকালে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসুচি শুরু করে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। এর আগে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পমাল্য অর্পণের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুদ আল ফারুকের সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবঃ) সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কৃষিবিদ দেওয়ান কামাল আহমেদ, জেলা শ্রমিক ঐক্য সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ প্রমুখ। এতে সঞ্চালনা করেন সদর জেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক রাসেল আমিন স্বপন।
আলোচনা সভা শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মসফিকুল ইসলাম রিন্টু, জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি বজলার রহমান, জেলা ট্রাক-ট্রাংলড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রহমান ডালু, জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব আবু তালেব, যুগ্ম-আহবায়ক ওয়াহেদুজ্জামান ওপেলসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বর্ণাঢ্য র্যালিতে জেলা রিক্সা-শ্রমিক ইউনিয়ন, মাইক্রো-পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়ন, জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন, ট্রাক-ট্রাঙ্কলরি শ্রমিক ইউনিয়ন, শ্রমিক ইউনিয়ন ঐক্য পরিষদ, ডেকারেটর শ্রমিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন অংশ নেয়।
এছাড়াও, জেলা শ্রমিক ঐক্য সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন নেতৃত্বে জেলা শহরের বড় বাজার ট্রাফিক মোড় থেকে একটি বিশাল বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে শহরে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরোলে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে র্যালিটি জেলা প্রশাসনের আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
অপরদিকে, এককভাবে জেলা শ্রমিক দলের আয়োজনে নীলফামারী পৌরমার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করেন। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আখম আলমগীর সরকার, সাধারন সম্পাদক জহুরুল আলমসহ-অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম।
এ সময় শ্রমিক নেতারা বলেন, ১৮৮৬ সালে আমেরিকার সিকাগো শহরে শ্রমিকরা তাদের বেতন ভাতা নিয়ে যে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, তা আজও থামেনি। শ্রমিকদের অধিকার আদায় হয়নি। এখনও শ্রমিকদের ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। অতিরিক্ত সময় কাজ করায় কিন্তু পারিশ্রমিক দেয় না। কারণ মালিকদের দালালরা আমাদের প্রতিবাদের কণ্ঠ চেপে ধরেছে।
আরেক শ্রমিক নেতা আবু তালেব বলেন, আজ শ্রমিজীবি মানুষের যে সংগ্রাম তা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার জন্য। শ্রমিক হত্যার বিচার হয় না। শ্রমিকরা সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা পায় না। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহব্বান জানান তিনি।
একইভাবে সদরসহ ছয় উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যদায় (জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরীগঞ্জ ও সৈয়দপুরে) নানা কর্মসুচির মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে।