প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজস¤পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, আমাদের জ্বালানিতে স্বনির্ভর হতে হবে। গত ৩ বছরে আমাদের জ্বালানি তেলের জন্য অতিরিক্ত ১২ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। এতে আমাদের রিজার্ভের ওপর অনেক চাপ পড়েছে। সৌরসেচ বা সোলার ইরিগেশন পা¤প (এসআইপি) চালু করা হলে বাংলাদেশ বছরে ১০ লাখ টন ডিজেল সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।
গতকাল মঙ্গলবার(২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা শহরে ইকু হেরিটেজ হোটেল এন্ড রিসোর্টের সম্মেলন কক্ষে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের আয়োজনে “সারাদেশব্যাপী সোলার ইরিগেশন দ্রুত বাস্তবায়ন” বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বে বাণিজ্য এখন হুমকির মুখে পড়েছে, রাশিয়ায় যুদ্ধ, চায়নার সঙ্গে গন্ডগোল। বিভিন্ন দেশে মানুষ সংগ্রাম করছে। সেখানে আমরা নিজেদের আত্মনির্ভরশীল করার চেষ্টা করছি, তাতে দেশ উন্নত হবে, এ দেশটা সামনে এগিয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, সূর্য একটা প্রাকৃতিক শক্তির উৎস। সূর্যের মাধ্যমে সোলার ইরিগেশনকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষকের জন্য সাশ্রয় হবে এবং কৃষিতে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব হবে। এভাবেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর ব্যাপারে স্বনির্ভরতা অর্জন করা সম্ভব হবে আমাদের।
ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, সৌরসেচ প্রতি বছর ৩০ লাখ টন কার্বনডাই অক্সাইড দূষণ কমাতে সাহায্য করবে। দেশে সেচের জন্য প্রায় ১২ লাখ ২০ হাজার ডিজেল পা¤প ও চার লাখ ৩০ হাজারের বেশি বৈদ্যুতিক পা¤প ব্যবহার করা হয়। এটি দেশের মোট কৃষি খরচের ৪৩ শতাংশ। ডিজেল পা¤েপর পরিবর্তে আধুনিক ও কার্যকর সৌরসেচ ব্যবহার করা গেলে একদিকে নবায়নযোগ্য শক্তি পাওয়া যাবে, অন্যদিকে আমদানি করা ডিজেলের ওপর নির্ভরতা কমবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্ত হাতে দেশে উন্নয়ন করছেন। তিনি পদ্মা সেতু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শিতার কারণে বিদেশিদের কাছ থেকে সহায়তা না নিয়ে কৃষি খাতে এই সোলার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সমস্ত পরিকল্পনার মূল দর্শন হচ্ছে কৃষকবান্ধব। প্রধানমন্ত্রী সবসময় চিন্তা করেন কিভাবে উদ্ভাবন করা যাবে। সাধারণ মানুষ ও কৃষকদের সাহায্য করা যায়। তবে বিভিন্ন সময় পৃথিবীতে যে যুদ্ধ শুরু হয় তার প্রভাব আমাদের ওপর পড়ে। এতে বিপাকে পড়তে হয় অনেক সময়। ২০৪১ সালের মধ্যে সৌর শক্তি নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হলে কম জমি ব্যবহার করে বা কম বিকিরণ থেকে বেশি সৌর বিদ্যুৎ পাওয়ার প্রযুক্তির অবাদ বিচরণ নিশ্চিত করা আবশ্যক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও নেসকো চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ মাসুম আহমেদ চৌধুরী, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য দেবাশীষ চক্রবর্তী, নেসকো ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম, সৌর বিদ্যুৎ চালিত পা¤প প্রকল্পের পরিচালক সাকিল ইবনে সাঈদ, নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক সহ অনেকে।
এর আগে ওই দুপুরে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের সুবর্ণখুলি এলাকায় সৌর বিদ্যুৎ চালিত সেচপা¤প পরিদর্শন করেন তিনি।