মুক্তি পাগল বাঙালি জাতি এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এ ডিসেম্বরে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন প্রিয় স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান বিজয়। নাজমুল হোসেন শান্ত বাহিনী আজ শনিবার (২ ডিসেম্বর) সবুজ চা বাগানে ঘেরা সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম টেস্ট ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানে হারিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।
৩৩২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৭১.১ ওভারে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। বিজয়ের মাসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই জয়ে আনন্দে আত্মহারা টাইগার সমর্থকরা। সাদা পোশাকে বড় দল গুলোর বিপক্ষে টাইগারদের জয়ের পাল্লা ততটা ভারী না হলেও ২০১৬ সালে ইংল্যান্ড এবং ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর আজ সিলেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে এই জয় অনেক তাৎপর্যপূর্ণ।
শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তারুণ্য নির্ভর একদল নিয়ে মাঠে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেনের মত খেলোয়াড় ছাড়া দলটি যে কিইদের বিপক্ষে টেস্টে জয় পাবে ম্যাচ শুরুর আগে কেউ কি ভেবেছিলেন? অনেকের ধারণা ছিল সাদা পোশাকে বিবর্ণ টাইগাররা বড়জোর ম্যাচটিকে তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারবেন।
সব হিসাব নিকাশ ভুল প্রমাণিত করে যোগ্যতার দল হিসাবে ম্যাচ জিতে নিয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ম্যাচ শুরুর আগে সিলেটের উইকেট নিয়ে অনেক কথাই হয়েছিল। উইকেটটি যে ঘুর্নিবান্ধব হবে তা আগেই জানা ছিল। স্পিন আক্রমণে টাইগারদের চেয়ে নিউজিল্যান্ড যোজন যোজন এগিয়েছিল। কেউইদের বিশ্বমানের স্পিনাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই লড়াই করেছেন তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসানরা।
প্রথম ইনিংসে স্বাগতিক বাংলাদেশ ৩১০ রান তুলতে সক্ষম হয়। টাইগার বোলাররা নিউজিল্যান্ডকে ৩১৭ রানে গুটিয়ে দিলে ৭ রানের লিড পায় সফরকারীরা। দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর (১০৫) দুর্দান্ত সেঞ্চুরি এবং মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ফিফটির উপর ভর করে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
ম্যাচ জিততে ৩৩২ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে চতুর্থ দিন শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। ফলে পঞ্চম দিনে গড়ায় ম্যাচ। এ টেস্ট জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন পড়ে তিন উইকেট অন্যদিকে কিইদের দরকার ছিল ২১৯ রান। আজ সকালে ড্যারেল মিচেলকে নাঈম হাসান ৫৮ রান সাজঘরে ফেরালে বাংলাদেশের জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
এরপর উইকেটে ভয়ঙ্কর রূপে আবির্ভূত হওয়া টিম সাউদিকে আউট করে সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ফাইফার তুলে নেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। এ নিয়ে টেস্টে ১২ পাঁচ উইকেট তুলে দিলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ৩৯ ওভার বল করে ৯ টি মেডেন ওভারসহ ১০৯ রানের বিনিময়ে চার উইকেট তুলে দেন তাইজুল ইসলাম। প্রথমে ইনিংসে চার উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে সিলেট টেস্টে অসাধারণ বোলিং করেছেন বাঁ হাতে স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দ্বিতীয় ইনিংসে তাজুল ইসলাম ৭৫ রানের ৬ উইকেট তুলে নেন। সিলেট টেস্টে ১২৪ রানের বিনিময়ে ১০ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ অগ্রণী ভূমিকা রাখেন তাইজুল ইসলাম।