চিরিরবন্দর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রিপোর্ট করলে অফিসে পাওয়া যাবে!

 দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহমিদা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিস না করে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিপোর্ট করলে অফিসে পাওয়া যাবে।

জানা গেছে , চিরিরবন্দর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহমিদা ইসলাম যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত অফিসে আসেন না। তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় থাকেন। সপ্তাহে ২-১ দিন অফিসে এসে কাজ করে চলে যান। এসময় সেবাগ্রহিতারা সেবা নিতে এসে অফিসে তাকে না পেয়ে বিরক্ত ও রিক্তহস্তে ফিরে যান। অনেকে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে অফিসে না পেয়ে ফোন দিলে তিনি জানান, জেলার মিটিংয়ে আছি অন্যদিন অফিসে আসেন।

গত ১০ সেপ্টেম্বর রোববার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিস খোলা থাকলেও তিনি নেই। অফিসের কর্মচারীরা বলেন স্যার অফিসে নেই। জেলার মিটিংয়ে গেছেন। জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলায় কোন মিটিং নাই। তিনি জেলা কার্যালয়ে আসেনি।

উপজেলার আলোকডিহি গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি গত দুই সপ্তাহ ধরে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিসে ঘুরতেছি কিন্তু ম্যাডামকে পাইনি। অফিসের কর্মচারীদের নিকট স্যার কোথায় আছেন বা গেছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, স্যার অফিসে আসেন নাই। উনি জেলার মিটিংয়ে গেছেন। আজ বিরক্ত হয়ে জেলা কর্মকর্তার কার্যালয়ে খবর নিলাম সেখানেও তিনি যাননি। আমার পরিবারের মাতৃত্বকালিন ভাতার সমস্যাজনিত কারণে প্রতিনিয়ত ঘুরছি। ম্যাডাম না থাকায় আমার কাজটির সমাধান করতে পারছি না। 

ফতেজংপুর ইউপির মোল্লাপাড়ার রুবেল ইসলাম বলেন, আমার পরিবারের মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকার সমস্যা ওনার নিকট জানতে চাইলাম ম্যাডাম সমাধান কী? উনি উচ্চস্বরে বললেন, আমি কী করবো? এসময় তিনি মাথা তুলেও দেখলেন না। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে আমাকে সেখান থেকে চলে আসতে হলো।

আব্দুলপুর গ্রামের রুবেল ইসলাম বলেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে ঠিকমতো অফিসে পাওয়া যায় না। একটা কাজের জন্য ঘুরছি। উনি অফিসে ঠিকমত আসেন না, তাই কাজটাও হচ্ছে না।

আব্দুলপুর ইউপি সদস্য আনোয়ার বেগম বলেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিয়মিত অফিস করেন না। তিনি সপ্তাহে মাত্র ১-২দিন অফিস করেন। বাকিদিন অফিসে আসেন না। যেদিন তিনি অফিসে আসেন সেদিন কোন কাজ নিয়ে গেলে, আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন।

চিরিরবন্দর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. লায়লা বানু বলেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিয়মিত অফিস করে না। বছর খানেক আগে তিনি চিরিরবন্দরে যোগদান করেছেন। তার যোগদানের পর থেকেই এ সমস্যা। ওনার কাছে জানতে চাইলে উনি জেলা কার্যালয়ে মিটিংয়ে আছেন বলে জানান। জেলা কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি সেখানেও যাননি। সেখানে কোন মিটিংও নাই।

এ ব্যাপারে  উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহমিদা ইসলামের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিয়মতি অফিস করি না। একটা রিপোর্ট করে দেন তাহলে অফিসে পেয়ে যাবেন বলে ফোন কেটে দেন।

এ ব্যাপারে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোরশেদ আলী খান বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি, তিনি জেলার মিটিংয়ের কথা বলে অফিসে আসেন না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • Related Posts

    নতুন বছরে সোনার দামে রেকর্ড

    নতুন বছর শুরুর পর প্রথমবারের মতো দেশের বাজারে ফের বেড়েছে সোনার দাম। এ দফায় ভরিতে সর্বোচ্চ এক হাজার ১৫৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। দাম বাড়ানোর…

    Continue reading
    বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম পরিবর্তনের সুপারিশ

    ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। আর প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ করার প্রস্তাবও করেছে কমিশন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন…

    Continue reading

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    মুক্ত মতামত

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও কি কোটা ব্যবস্থায় চাকরি পাওয়া যায়?

    কোটা পুনর্বহালে স্থিতাবস্থা মানে কি?

    প্রধানমন্ত্রীর সফরে পাঁচ মূলনীতির উন্নয়ন করতে চায় চীন

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি