সৈয়দপুরে ফিল্মি স্টাইলে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ দুই দিনেও উদ্ধার হয়নি

নীলফামারীর সৈয়দপুরে পল্লীতে ফিল্মি স্টাইলে মেধাবী স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ঘটনার ২দিন পেরিয়ে গেলেও ছাত্রীর খোঁজ মেলেনি। ছাত্রীটির পরিবারের দাবী ইউপি মেম্বার চেয়ারম্যান ও পুলিশ প্রশাসন নির্বিকার থাকায় তাদের মেয়েকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মেয়েটির পরিবার দূশ্চিন্তায় দিশেহারা পরেছে। সেই সাথে অপহরণকারী যুবকের পরিবার থেকে নানাভাবে হুমকি দেয়ায় জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
গত শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬ টায় বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের করোনার মোড় এলাকায় মোজাফ্ফরের স’ মিলের সামনে এই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অপহৃত ছাত্রী বোতলাগাড়ী মাঝাপাড়া এলাকার রাইস মিল মিস্ত্রি রবিউল ইসলামের মেয়ে এবং বোতলাগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী।
জানা যায়, দীর্ঘ দিন থেকে ছাত্রীটি স্কুল ও কোচিং এ যাতায়াতের পথে সাগর (২২) নামে এক যুবক তাকে উত্যক্ত করে আসছে। সাগর পার্শবর্তী বোতলাগাড়ী হাজিপাড়ার মো. হামিদুল ইসলামের বড় ছেলে ও সৈয়দপুর সরকারী কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বর্ষার ভাই আবু সাঈদ (১৫) বলেন, প্রতিদিনের মত শনিবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে আপুকে বাই সাইকেলে নিয়ে কোচিং এ যাওয়ার সময় মোজাফ্ফরের স’ মিলের সামনে পৌঁছতেই পিছন একটা মাইক্রোবাস ওভারটেক করে সামনে এসে পথরোধ করে। সাগর সহ অচেনা আরও দুইজন যুবক নেমে আপুকে টেনে সাইকেল থেকে নামিয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আমি মাটিতে পড়ে গেলে তারা টেনে হিচড়ে মাইক্রোতে তুলে দ্রুত চলে যায়। এসময় হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। রাস্তায় বা আশেপাশে লোকজন না থাকায় আপু ও আমি চিৎকার করলেও কেউ আসেনি। পরে আমি বাড়িতে এসে সব বলি।
বর্ষার মা রোজিনা বেগম বলেন, সাগর ছেলেটা বখাটে ও নেশাখোর। আমার মেয়েকে অনেক বিরক্ত করেছে। ওর বাবা হামিদুলকে জানালেও ছেলেকে শাসন করেনি। একারণে এর আগে একদিন আমাদের বাড়িতে এসে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেসময় মেম্বার চেয়ারম্যান সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বৈঠক করলে সাগরের অভিভাবকরা কথা দেয় ভবিষ্যতে আর এমন হবেনা। কিন্তু তারপরও থেমে নেই ছেলেটির বখাটেপনা।
সাগরের ছোট ভাই সোহাগ বলেন, ভাই মেয়েটাকে ভালবাসে। মেয়েটাও ভাইকে পছন্দ করে। কিন্তু মেয়ের বাবা তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। তাই ভাই বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে মেয়েকে ডেকে এনে মাইক্রো করে ঢাকায় চলে গেছে এবং বিয়ে করেছে। কিন্তু এখন তাদের মোবাইল বন্ধ তাই আর কোন খোঁজ জানা যায়নি। এজন্য আব্বা আম্মাও খুব চিন্তায় আছে এবং মামলা করায় তারা বাড়ি থেকে সরে আছে। বাবার মোবাইলও বন্ধ করে রেখেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জুন সরকার বলেন, বিষয়টা পারিবারিক ভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। ছেলের বাবাকে সোমবারের মধ্যে উপস্থিত করতে বলেছি। হামিদুল ছেলে-মেয়েকে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। তাই সময় দিতে হবে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, কি অভিযোগ দিয়েছে তা আমি দেখি নাই। তাই কিছুই বলতে পারবোনা। দেখার পর বিষয়টি তদন্ত করা হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • Related Posts

    সৈয়দপুরে শহিদ জিয়ার জন্মদিন পালন

    নীলফামারীর সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি ও অঙ্গ দল সমূহ শহিদ প্রেডিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিন পালন করেছে। এ দিবস উপলক্ষে, ১৯ (জানুয়ারি) রবিবার সকালে জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও…

    Continue reading
    সৈয়দপুরে রেল লাইনের উপর দোকান দুর্ঘটনার আশংকা

    নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেললাইনের উপর গড়ে উঠেছে অস্থায়ী শীত বস্ত্রের দোকান। ওই দোকানগুলো গরীব-অসহায় মানুষের ভরসাস্থল হলেও ট্রেন দুর্ঘটনায় মানুষজনের প্রাণহানির আশংকায় পরিনত হয়েছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ২শ’ গজ দুরে…

    Continue reading

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    মুক্ত মতামত

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও কি কোটা ব্যবস্থায় চাকরি পাওয়া যায়?

    কোটা পুনর্বহালে স্থিতাবস্থা মানে কি?

    প্রধানমন্ত্রীর সফরে পাঁচ মূলনীতির উন্নয়ন করতে চায় চীন

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি