সৈয়দপুরে শ্রমিককে মারপিটের ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য হোটেল বন্ধ ঘোষণা 

নীলফামারীর সৈয়দপুরে হাঁসের মাংস খাওয়া নিয়ে মোটর শ্রমিক ও হোটেল শ্রমিকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সসৈ এক পর্যায় দলবদ্ধ হয়ে মোটর শ্রমিকের লোকজন এসে তাজির উদ্দিন গ্রান্ড হোটেল ভাংচূর করে এবং বেশ কয়েকজন হোটেল শ্রমিককে পিটিয়ে আহত করে। 

দোষিদের বিচার চেয়ে বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি ও সৈয়দপুর উপজেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন শহরে বিক্ষোভ করে। সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত সৈয়দপুরে সকল হোটেল অনির্দিষ্ঠকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মালিক পক্ষ।

শান্তি রক্ষার্থে সৈয়দপুর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এটি ঘটেছে ২৫ আগস্ট রাতে শহরের ঐতিহ্যবাহী তাজির উদ্দিন গ্রান্ড হোটেলে।

আহত হোটেল শ্রমিক আবুল কালাম আজাদ জানান, মাইক্রো, জীপকার, পিকআপ সৈয়দপুর উপকমিটির শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলমসহ বেশ কয়েকজন ভাত খেতে হোটেলে আসেন। এ সময় তারা হাঁসের মাংস খেতে চাইলে তাদের দেয়া হয়। তারপর গরুর মাংসও খায়। বিল পরিশোধ করার সময় এদের মধ্য জাহাঙ্গীর আলম হাঁসের মাংসকে মুরগীর মাংস বলে হোটেল মালিককে অভিযোগ দেন। 

বিষয়টি নিয়ে হোটেল মালিক তাদের সাথে কথা বলতে থাকলে হঠাৎ করে মোটর শ্রমিকরা হোটেল শ্রমিকদের এলোপাতারি পেটাতে থাকে। এক পর্যায় উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে হোটেল মালিক উভয়ের মধ্যে হাত মিলিয়ে দিয়ে সমস্যার সমাধান করে দেন।

মোটর শ্রমিকরা সেখান থেকে চলে যায়। এর কিছু সময় পর আবার ১০ থেকে ১২ জন মোটর শ্রমিক দলবদ্ধ হয়ে হোটেলে এসে সকল শ্রমিককে মারপিট  এবং হোটেল ভাংচূর করে। এতে আহত হয় বেশ কয়েকজন হোটেল শ্রমিক। ক্ষতি হয় হেটেলের প্রায় কয়েক লাখ টাকার।

হোটেল মালিক আতিয়ার রহমান বলেন, সবাই চেনাজানা। মাংস খাওয়া নিয়ে এমন ঘটনা ঘটবে তা কল্পনা করতে পারি নাই।

এদিকে রাতেই হোটেল শ্রমিক এবং মালিক সমিতি ওই মোটর শ্রমিকদের বিচার চেয়ে শহরে বিক্ষোভ করেছে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত সৈয়দপুর উপজেলার সকল হোটেল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সৈয়দপুর উপজেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, অযথা আমাদের শ্রমিককে মারা হল। কেন মুরগীর মাংকে আমরা হাঁসের মাংস বলবো। এতে কি লাভ আমাদের। মোটর শ্রমিকরা হাঁসের মাংস খেয়ে বলছে এটা মুরগীর মাংস। 

বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি সৈয়দপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্রী সখেন ঘোষ বলেন, মোটর শ্রমিকের কতিপয় সদস্য প্রায় সময় হোটেলে খেতে এসে হোটেল শ্রমিককে মেরে থাকে। এর পুর্বেও তারা বেশ কয়েকবার হোটেল শ্রমিককে মেরেছে। এবার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা সকল হোটেল বন্ধ ঘোষণা করেছি।

নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। দ্রুত সময়ে উভয়কে নিয়ে মিমাংসা করা হবে।

  • Related Posts

    সৈয়দপুরে শহিদ জিয়ার জন্মদিন পালন

    নীলফামারীর সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি ও অঙ্গ দল সমূহ শহিদ প্রেডিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিন পালন করেছে। এ দিবস উপলক্ষে, ১৯ (জানুয়ারি) রবিবার সকালে জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও…

    Continue reading
    সৈয়দপুরে রেল লাইনের উপর দোকান দুর্ঘটনার আশংকা

    নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেললাইনের উপর গড়ে উঠেছে অস্থায়ী শীত বস্ত্রের দোকান। ওই দোকানগুলো গরীব-অসহায় মানুষের ভরসাস্থল হলেও ট্রেন দুর্ঘটনায় মানুষজনের প্রাণহানির আশংকায় পরিনত হয়েছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ২শ’ গজ দুরে…

    Continue reading

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    মুক্ত মতামত

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও কি কোটা ব্যবস্থায় চাকরি পাওয়া যায়?

    কোটা পুনর্বহালে স্থিতাবস্থা মানে কি?

    প্রধানমন্ত্রীর সফরে পাঁচ মূলনীতির উন্নয়ন করতে চায় চীন

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি