নীলফামারীতে ডাকাতি করতে এসে টাকা না পেয়ে সোনালী ব্যাংকের উত্তরা ইপিজেড উপ-শাখায় অগ্নিসংযোগ

নীলফামারীতে সোনালী ব্যাংকের উত্তরা ইপিজেড উপ-শাখায় ডাকাতি করতে এসে টাকা না পেয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায় দুস্কৃতিকারীরা। গত শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ব্যাংকে প্রবেশ করে নিরাপত্তা কর্মীকে মারধর ও হাত পা বেধে রেখে এ ঘটনা ঘটায়। রাত দুইটার দিকে খবর পেয়ে দমকলবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এঘটনায় ব্যাংকের উপ-শাখা ব্যাবস্থাপক মো. আব্দুল মোনায়েম বাদী হয়ে রবিবার সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এলাকাবাসী জানান, কয়েকদিন আগে ব্যাংকের ওই শাখায় একটি নতুন ভোল্ট স্থাপন করা হয়। শনিবার রাতে ডাকাতির উদ্দেশ্যেই সেখানে প্রবেশ করে দুস্কৃতিকারীরা। এরপর ভেতরে তল্লাসী ও ভাঙচুর করে টাকা না পেয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী।
ব্যাংকের আহত নিরাপত্তা কর্মী মো. মাসুদ রানা (২৪) চিকিৎসাধীন আছেন নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে। ঘটনার বর্ননা দিয়ে রবিবার দুপুরে তিনি বলেন, ‘শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমার শরীর খারাপ লাগছিল। ঘুম আসছিল না আসায় ব্যাংকের নিচে পান খাওয়ার জন্য নামি। এরপর ব্যাংকের মূল ফটকে তালা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করি। ঘনঘন পায়খানার চাপ আসায় ব্যাংকের ভেতরের বাথরুমে ঢুকি। সেখানে ১০ মিনিট সময় ছিলাম। বাথরুম থেকে বের হতেই আমার মাথায় আঘাত করে দুস্কৃতিকারীরা। এসময় আমি তিনজনকে দেখতে পেয়েছি। সবার মাথায় টুপি ও মাফলার দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল। আমাকে এলোপাথারী মারডাং করে এবং ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লকারের চাবি চায়। আমি বলেছি এখানে কোনো টাকা থাকে না। তারা ব্যাংকের বিভিন্ন স্থানে তল্লাসী এবং ভাঙচুর করে। টাকা না পেয়ে আমার হাত পা বেধে সিড়ির নিচে ফেলে দিয়ে ব্যাংকের ভেতর অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।’ দুস্কৃতিকারীরা মূল ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেছে বলে জানান তিনি।
ওই উপ-শাখার ব্যাবস্থাপক মো. আব্দুল মোনায়েম বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে ব্যাংকের ভেতর আগুন জ¦লার শুনে ভবন মালিক মো. রফিকুল ইসলাম শাহ রাত দুইটার দিকে আমাকে ফোনে জানায়। বিষয়টি আমার উর্দ্ধতনকে অবহিত করে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে দমকল বাহিনীকে খবর দেই। দমকল বাহিনী ও টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ভাঙচুর ও অগ্নিকা-ের ঘটনায় আমার (ব্যাবস্থাপক) ও গার্ড রুমের আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পুড়ে যায়। তবে ওই শাখায় কোনো টাকা পয়সা ছিল না। এঘটনায় আমি বাদী হয়ে নীলফামারী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি’।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আর সাঈদ বলেন, ‘সেখানে ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা ডাকাতির বিষয়ে অভিযোগও করেনি। ব্যাংকে আগুন লাগার বিষয়ে অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে’।

  • Related Posts

    শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট নীলফামারী সদর উপজেলা শাখার পরিচিতি সভা

    বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট (স্কুল,কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি) শিক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নব গঠিত নীলফামারী সদর উপজেলা শাখা কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারী) সদর উপজেলা শাখা কমিটির…

    Continue reading
    চিরিরবন্দরে সোনালী ব্যাংকের শীতবস্ত্র বিতরণ 
    • adminadmin
    • জানুয়ারি ১৪, ২০২৫

    হতদরিদ্র ও অসহায়দের মাঝে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে সোনালী ব্যাংকের উদ্যোগে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি সোমবার বিকালে চিরিরবন্দর সোনালী ব্যাংক পিএলসি’র আয়োজনে ব্যাংকের অফিসে সিএসআর কর্মসূচির আওতায় অসহায়…

    Continue reading

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    মুক্ত মতামত

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থপরতার আন্দোলন!

    ‘রাজাকার’ ইস্যু বানিয়ে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি

    প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    আজকের আন্দোলনকারীরা কি ২০১৮ এর ভুলটিই করবেন?

    নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও কি কোটা ব্যবস্থায় চাকরি পাওয়া যায়?

    কোটা পুনর্বহালে স্থিতাবস্থা মানে কি?

    প্রধানমন্ত্রীর সফরে পাঁচ মূলনীতির উন্নয়ন করতে চায় চীন

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা ভাবা যেতে পারে

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুঘটক

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি

    ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির লাভ-ক্ষতি