নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক ৬০ বছর বয়সী মাকে রাস্তায় ফেলে দিলেন তার স্বজনরা। ওই বৃদ্ধা রেহানা বেওয়া সৈয়দপুর শহরের বাঁশবাড়ী এলাকায় থাকতেন। গতকাল রবিবার সবার অজান্তেই সন্ধ্যার পরে বৃদ্ধাকে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের নতুন ডাঙ্গা পাড়ায় রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে যায় তাঁর আপনজনরা। পরে রাতে এলাকার মানুষজন দেখতে পেয়ে কিছু গরম কাপড় দিয়ে আগলে রাখে। পরে এলাকার যুবক রাসেল, খোরশেদ স্বেচ্ছাসেবক ও সংবাদকর্মী নওশাদ আনসারী সহযোগিতায় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে যান।
জানা যায়, বৃদ্ধার শরীরে ছিল প্রচন্ড জ¦র। রাস্তার ধারে পড়ে শীতে কাঁপছিলেন তিনি। শরীরের দানা বাধা নানা রোগ আর বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন। শরীরের এক সাইডে পুরো প্যারালাইসড তাই চলাচলও করতে পারেন না তিনি। সন্ধ্যায় রাস্তার ধারে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসীও বুঝতে পারে যে হয়তো কেউ ফেলে দিয়ে গেছে এই অসহায় মাকে।
কনকনে শীতের মধ্যেই ওই অসহায় মাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গেছে তাঁরই আপনজনরা। পরে সমাজসেবক ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় অসহায় ওই মায়ের জায়গা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমে। বৃদ্ধাশ্রমের কর্ণাধার সাজেদুর রহমান সাজু নিজেই উপস্থিত হয়ে ওই মাকে বৃদ্দাশ্রমে নিয়ে যান।
ওই এলাকার খোরশেদ আলম জানান, সন্ধ্যায় রাস্তার ধারে বৃদ্ধাকে পড়ে থাকতে দেখি। রোগাক্রান্ত হওয়ায় তিনি চলা ফেরাও করতে পারতেছেন না। চা পানি নাস্তা দিলেও খেতে চাচ্ছিলেন না তিনি। তাঁকে কে বা কাহারা ফেলে দিয়ে গেছে। পরে এলাকাবাসী ও স্বেচ্ছাসেবক এর সহযোগিতায় তাকে নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমে রাখার ব্যবস্থা করি।
সেচ্ছাসেবক নওশাদ আনসারী ও রাসেল আহমেদ জানান, ওই বৃদ্ধা মায়ের এক ছেলে ছিল সে মারা গেছে। পরে ছেলের বউয়ের অনত্রে বিয়ে হলে অসহায় হয়ে পড়ে এই মা। তাছাড়া তিনি রোগাক্রান্ত হওয়ায় হয়তো তার কোন আপনজনই রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে যায়। পরে মানবসেবক নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমের মালিক সাজু ভাইকে ফোনে অবগত করলে তিনি সাদরে ওই মাকে গ্রহন করেন এবং নিজেই মাইক্রোবাস নিয়ে এসে বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে যান।
বৃদ্ধাশ্রমের মালিক সাজু জানান, খবর পেয়ে আমি নিজেই ছুটে গিয়েছি, আমার নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমে অসহায় মা-বাবাদের জন্য সব সময় খোলা। তাই এই বৃদ্ধাশ্রমে যতদিন তিনি থাকতে চায়, আমি তাকে ততদিন রাখব ইনশাআল্লাহ।