জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের পিতা আলমগীর হোসেনের কর্মসংস্থান করে দিলেন নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর প্রশাসক। পৌরসভা কার্যালয়ে ওয়াক্তিয়া নামাজের স্থান নির্ধারণ করে সেখানে ইমামতির দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। সোমবার (১৮ নভেম্বর) মাগরিবের নামাজের ইমামতির মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রমের শুরু হয়েছে।
নামাজ শেষে দোয়া অনুষ্ঠানের আগে বক্তব্য রাখেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক নুর ই আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ২৪ এর আন্দোলনের কারণে আজ আমরা মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিতে পারছি। স্বাধীনতার স্বাদ নতুন করে বাংলার মানুষ পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর এজন্য কৃতিত্ব মূলত: ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ ও আহত গাজীদের।
সৈয়দপুরের কৃতি সন্তান সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং চুড়ান্ত সেমিস্টারের ছাত্র শহীদ সাজ্জাদ হোসেন। তিনি গত ৫ আগস্ট সাভারে রাজপথে আন্দোলন কালে গুলিবিদ্ধ হন। পরের দিন সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁকে সৈয়দপুর হাতিখানা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
পৌর প্রশাসক আরও বলেন, শহীদ সাজ্জাদ হোসেন ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম। লেখাপড়ার পাশাপাশি গার্মেন্টসে চাকরি করে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতেন। ছেলে শহীদ হওয়ার পর তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন বাবা আলমগীর হোসেন। তাই তাঁকে সহযোগিতার জন্য আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।
একটা মহৎ কাজের সাক্ষী হয়ে আজ আমরা এখানে একজন শহীদের পিতার নেতৃত্বে নামাজ আদায় করলাম এবং নিয়মিত করবো। কাজটা করার ক্ষেত্রে সাংবাদিক মহসিন, জাকির ও শাহজাহান এবং উপজেলা জামায়াতের আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছেন। ইমামের সম্মান বজায় রাখা এবং তাঁর ভালোমন্দে সহযোগিতা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা যেন এই দায়িত্ব সঠিক ভাবে আঞ্জাম দিতে পারি সেজন্য সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
তিনি আরও বলেন, আপাতত অস্থায়ী হিসেবে তাঁকে সম্মানী দেয়া হবে। আগামীতে পৌরসভার একটা মসজিদ তৈরীর পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে তিনি স্থায়ীভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন। তাছাড়া বাঙালীপুর ইউনিয়নে ৫ শতক সরকারি জমি শহীদের পরিবারকে বরাদ্দ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেখানে তারা বাড়ি করতে পারবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের আহবায়ক ও বিএনপি নেতা শওকত হায়াত শাহ, পৌর নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম, হিসাব রক্ষক আবু তাহেরসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারী ও সাংবাদিকবৃন্দ।