নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে যাত্রী নিরাপত্তায় স্থাপিত সিসি টিভি ক্যামেরা রেলওয়ে স্টেশনে সংস্কার কাজের জন্য ২০২২ সালে খুলে রাখা হয়। সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও সেই সিসি ক্যামেরাগুলো আর স্থাপন করা হয়নি।
এতে করে বেড়েছে চুরির ঘটনা।
যাত্রীদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এভাবে দীর্ঘদিন থেকে অরক্ষিত এ স্টেশনে নিরাপত্তাহীনভাবে চলাচল করতে হচ্ছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, স্টেশনটি রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয় ২০১৬ সালে। তবে গত বছর ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলওয়ের এ স্টেশনে আধুনিকায়নের কাজ করা হয়। সেই সময় প্ল্যাটফর্ম শেড নির্মাণের জন্য সব সিসি টিভি ক্যামেরা খুলে রাখা হয়। কিন্তু সংস্কার শেষ হওয়ার প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও সিসি টিভি ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপন করা হয়নি। এতে করে অপরাধমূলক কার্যক্রম বেড়েছে, যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়ার বাসিন্দা আলতাফ হোসেন (৪৫) নামে এক যাত্রী জানান, ট্রেনে করে নিয়মিত এই রুটে তাকে চলাচল করতে হয়। সম্প্রতি ব্যবসার কাজে ট্রেনে করে সৈয়দপুর রেলস্টেশন থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন তিনি। কাগজে মোড়ানো দেড় লাখ টাকা ছিল তার পকেটে। ট্রেনে উঠতে গিয়ে কেউ তার পকেট থেকে টাকাটা বের করে নেন। ট্রেনে ওঠার পর বিষয়টি বুঝতে পেরে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন তিনি।
পরে স্টেশনের রেলওয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। টাকাটা কে নিয়েছে তা সিসি ক্যামেরা অনুসন্ধানের পুলিশকে অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় স্টেশনে সিসি ক্যামেরা নেই। ফলে নিরাশ হয়ে ফিরতে হয় তাকে। আলতাফ হোসেন শুধু একাই নন তার মতো এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী অনেকেই অভিযোগ করেন সিসি টিভি ক্যামেরা না থাকায় তাদের প্রায় এ ধরনের ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকিউল আযম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ রেলওয়ে স্টেশন অপরাধমুক্ত রাখতে সিসি টিভি ক্যামেরাগুলো জরুরি ভিত্তিতে পুনঃস্থাপন করা দরকার। তা না হলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অপরাধীরা অপরাধ করে সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে। তাদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ওবাইদুল ইসলাম রতন বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ স্টেশনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০টি সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল। এসব সিসি টিভি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করত স্টেশন মাস্টারের অফিসকক্ষ। কিন্তু স্টেশন সংস্কারের সময় সেগুলো খুলে রাখা হলেও সেগুলো পুনঃস্থাপন করা হয়নি। ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপনের দায়িত্ব ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী পার্বতীপুর কার্যালয়ের। বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে।
পার্বতীপুর কার্যালয়ের রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (টেলিকম) আব্দুল মালেক বলেন, জনবল সংকটের কারণে সিসি টিভি ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। যেভাবেই হোক না কেন খুব শিগগিরই ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপন করা হবে।