উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসা কেন্দ্র নীলফামারীর সৈয়দপুর প্লাজা ও এসআর প্লাজা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মার্কেটের প্রকল্প পরিচালকের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২ টায় মার্কেটের সামনে এর আয়োজন করে ব্যবসায়ীবৃন্দ।
এতে বক্তব্য রাখেন, ব্যবসায়ী সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি শেখ কুতুব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সাগর, সহ-সভাপতি আখতারুজ্জামান সুরুজ ও সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানোয়ার হোসেন মনু, দপ্তর সম্পাদক আরমান শেখ পাখি, ক্রীড়া সম্পাদক কোমল সরকার।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি আরশেদ আলো, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, সাবেক আহবায়ক মো. আনোয়ারুল, মার্কেটের মসজিদের ইমাম মাওলানা ময়নুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন, নিজাম দেওয়ান, রওশন মাহানামা, মহিলা সদস্য শাহনাজ পারভিন ও আঞ্জুয়ারা এবং মামলার ১ নং আসামী আব্দুল বারী।
বক্তারা বলেন, রমজানের ঈদ হলো ব্যবসায়ীদের জন্য মূল বাণিজ্যের মৌসুম। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্লাজা কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের কৃত্তিম সমস্যা সৃষ্টি করে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তিতে ফেলে। গত ঈদেও বিদ্যুতের বিপর্যয় ঘটায়। এতে ব্যবসায় চরমভাবে বিঘিœত হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রতিকার দাবী করে। কিন্তু তিন দিনেও এব্যাপারে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রকল্প পরিচালকের অফিসে গিয়ে তাকে না পেয়ে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করে ফিরে আসেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রকল্প পরিচালক ৭ জন ব্যবসায়ীর নামে গালিগালাজ, হত্যার হুমকি ও অফিসে তালা দেয়ার অভিযোগে প্রথমে জিডি ও পরে মামলা দায়ের করেন। যা আদালত কর্তৃক ডিবি তদন্ত করে। ব্যবসায়ীরা এভাবে মামলা দায়ের করে হয়রানীর বিষয়টা মার্কেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব সামসুল হক ভূঁইয়াকে অবগত করলে তিনি সমাধানের আশ্বাস দেন।
দীর্ঘ দিন পেরিয়েও তাঁরা মামলা প্রত্যাহার না করায় ডিবির প্রতিবেদন দাখিল হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে প্রকল্প পরিচালক আলহাজ্ব গুলজার আহমেদ কে বার বার তাগাদা দেয়া সত্বেও তিনি তালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা। এমতাবস্থায় তারা আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে এই মানববন্ধনের আয়োজন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
তারা আরও অভিযোগ করেন যে, মার্কেট স্থাপনকালে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল যে, এই মার্কেটে একটি হাসপাতাল, মসজিদ, লিফট, পানি ফোয়ারা ও পৃথক সবজি বাজার করা হবে। কিন্তু কিছুই করা হয়নি। কয়েকটি দোকানের স্পেস নিয়ে নামাজের জায়গা করা হলেও তা নিয়ন্ত্রণ করেন প্রকল্প পরিচালক।
মার্কেটে মাদক, বখাটেপনা ও কফিসপের আড়ালে বেলেল্লাপনা চলায় এর প্রতিবাদ করায় ইমামকে বরখাস্ত করেছেন একক সিদ্ধান্তে। নামাজের স্থানে একজন ব্যবসায়ী এসি লাগাতে চাইলে তিনি বাধা দিয়েছেন বিদ্যুতের বিল বেশি আসবে বলে। অথচ সব বিল ব্যবসায়ীরাই দেয়।
তাছাড়াও আরও নানা দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাসাধারণকে। প্রায় এক হাজার দোকানের এতবড় মার্কেটের মাত্র ৬টি করে প্রস্রাবাগার ও শৌচাগার। সবজি বাজার করার স্থানে করা হচ্ছে আরও মার্কেট তথা দোকান। কর্তৃপক্ষ শুধু মুনাফাই করতে চান, কোন সুবিধা দিতে চাননা। আজও লিফটের ব্যবস্থা করা হয়নি।
তার উপর বিদ্যুতের সরবরাহে দূরাবস্থার প্রতিবাদ করায় মিথ্যে মামলা দিয়ে ব্যবসায়ীদের কোণঠাসা করে রাখার অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। যা মেনে নেয়ার মত নয়। এইকারণে আজ আমরা মাঠে নেমেছি। এখনও সময় আছে ব্যবসায়ীদের সাথে সমঝোতায় এসে মামলা প্রত্যাহার করুন। নয়তো মার্কেট বন্ধ করে দেয়া হবে বলে আল্টিমেটাম দিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।