অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশে বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। উভয় সিটিতেই ইলেক্টনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলছে।
এরই মধ্যে ভোট শুরুর আগেই বরিশালের কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। সেখানে অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ইভিএম পদ্ধতিতে একে একে ভোট দিতে শুরু করেছেন ভোটাররা। শুরুতেই ভোট দিয়েছেন হাতপাখা প্রতীকের মেয়নপ্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। তিনি নগরীরর রূপাতলী হাউসিং শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন। সুষ্ঠু ভোট হলে ফলাফল যাই হোক মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
অন্যদিকে খুলনা সিটিতেও সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এবারের খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মোট ১৮০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৫ জন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৩৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে ৩৯ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। মেয়র প্রার্থীর মধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন।
নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খুলনা মহানগরীতে ১১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। গত শনিবার থেকে তারা ভোট কেন্দ্রসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে টহল শুরু করেছে।

খুলনা বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর রহমান জানান, কেসিসি নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে ২০ জন করে মোট ২২০ জন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতি দলে ৪ থেকে ৫ জন অফিসার দায়িত্বে রয়েছেন।
অপর দিকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৭ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ (নৌকা), জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল আহসান (ঘড়ি), আসাদুজ্জামান (হাতি) ও আলী হোসেন (হরিণ)।

এবার বরিশাল সিটি নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ জন। সিটি নির্বাচনে এবার নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৪ জন বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা।

এই সিটি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমন্বিত টহল শুরু করেছে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি। সকাল থেকে নগরীর ওয়ার্ডগুলোতে এসব বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। সড়কের মোড়ে মোড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪ হাজার ৪০০ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এরমধ্যে ২ হাজার ৩০০ পুলিশ। এছাড়া ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
খুলনায় মেয়র পদে ৫ জন এবং ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরই মধ্যে নগরীর ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
খুলনার মেয়র প্রার্থী যারা
তালুকদার আব্দুল খালেক (আওয়ামী লীগ, নৌকা প্রতীক), মো. আ. আউয়াল (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হাত পাখা), মো. শফিকুল ইসলাম মধু (জাতীয় পাটি, লাঙ্গল), এস এম শফিকুর রহমান (স্বতন্ত্র, টেবিল ঘড়ি) এবং এস এম সাব্বির হোসেন (জাকের পার্টি, গোলাপ ফুল)।
বরিশালের মেয়র প্রার্থী যারা
আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ (নৌকা), জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল আহসান (ঘড়ি), আসাদুজ্জামান (হাতি) ও আলী হোসেন (হরিণ)।
এছাড়া বরিশাল সিটির ৩০টি ওয়ার্ডে ১১৮ জন সাধারণ এবং ৪২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।