নীলফামারীর সৈয়দপুর-চিলাহাটি রুটে গেটলক মিনিবাস চলাচল বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে (১০ মে) সৈয়দপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কস্থ নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির প্রধান কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে  মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন যাত্রী সাধারনের সুবিধার্থে আরটিএ’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন ওই রুট চালু করা হয়েছে। অথচ এটি বন্ধে একটি মহল গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা  হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন ওই রুটে বাস মিনিবাস চলাচল বন্ধের ষড়যন্ত্র করা হলে গোটা জেলা পরিবহন ধর্মঘটের মাধ্যমে অচল করে দেওয়া হবে।  নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি, নীলফামারী জেলা সড়ক পরিবহন গ্রুপ ও নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন যৌথভাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহনওয়াজ হোসেন শানু তাঁর বক্তব্যে  বলেন, সম্প্রতি নীলফামারী জেলার ট্রান্সপোর্ট অথরিটির সভার সিদ্ধান্তে নীলফামার  জেলা পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠণের যৌথ উদ্যোগে সৈয়দপুর- চিলাহাটি রুটে  গেটলক মিনিবাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। গত ৮ মে সৈয়দপুর শহরের যানজটমুক্ত জিআরপি মোড় সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই গেটলক বাস সার্ভিস চালু করা হয়। ওইদিন নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি, নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ ফিতা কেটে ওই সার্ভিসের  উদ্বোধন করেন। ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিনসহ উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সড়ক পরিবহন  হচ্ছে যাত্রীদের সেবা প্রদানের একটি খাত।

সৈয়দপুর হচ্ছে নীলফামারী  জেলার একটি ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসিদ্ধ শহর।  জেলাসহ অন্য উপজেলার মানুষও এখানে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আসেন। তাই জনপদের মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা ও দাবি ছিল সৈয়দপুর-চিলাহাটি রুটে গেটলক বাস সার্ভিস চালুর। দীর্ঘদিন পর হলেও তাদের দাবি পূরণ করা হয়েছে। শহরের যানজটমুক্ত জিআরপি মোড় সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই গেটলক বাস সার্ভিসের অস্থায়ী স্ট্যান্ড করা হয়। আর যানজট এড়াতে সৈয়দপুর- চিলাহাটি রুটে চালু হওয়া বাসগুলো যানজটমুক্ত স্টেশন এলাকায় রাখা হচ্ছে। পরবর্তীতে ওই গেটলক বাসগুলো শুধুমাত্র শহরের দুই কিলোমিটার সড়ক ব্যবহার করে নীলফামারী সড়কে গিয়ে উঠছে। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয় এসব বাস মিনিবাস মালিকেরা বিপুল পরিমাণ অংকের পুঁজি বিনিয়োগ করে সরকারকে নিয়মিত রাজস্ব দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। শুধু তাই নয় সরকারীভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে এ সব বাস মিনিবাসের চালকেরাও সে সব চালাচ্ছেন। অথচ অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজি, পাগলু, ইজিবাইকগুলো থেকে সরকার কোন রকম রাজস্ব পাচ্ছে না। এসব অবৈধ যানবাহন চালকের কারণে সড়কে দূর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া এসব যানবাহনের কারণে শহরের কয়েকটি পয়েন্টে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ইতিমধ্যে গেটলক বাসগুলো সার্ভিস চালু হওয়ার পর থেকে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন অবৈধ চালকদের মাসোহারা খাওয়া একটি মহল। তারা সৈয়দপুর শহরে যানজটের অজুহাতে জনপ্রিয়  গেটলক বাস সার্ভিস বন্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের সে ষড়যন্ত্র কখনো সফল হতে দেয়া হবে না বলে সংবাদ সম্মেলনে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, যদি সম্প্রতি চালু হওয়া গেটলক বাস সার্ভিস স্ট্যান্ড বন্ধ করে দিতে হয়, তাহলে মহাসড়ক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ স্বল্প পাল্লার যানবাহন চলাচলও বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে সৈয়দপুর শহর থেকে অন্যান্য শহরে যাতায়াতের জন্য যে সব অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে তাও বন্ধ করতে হবে। তা না হলে নীলফামারী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা পরিবহন ধর্মঘটসহ আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলন  গড়ে তুলবেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যানদের মধ্যে নীলফামারী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. শাহাজাহান আলী চৌধুরী, নীলফামারী  জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, নীলফামারী জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক এফাজ উদ্দিন সরকার বক্তব্য রাখেন। 

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন  নীলফামারী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সহ-সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান জুয়েল, নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম রয়েল, দপ্তর সম্পাদক ওবায়দুল হক, নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি জিকরুল হক, কোষাধ্যক্ষ মনছুর আলী, প্রচার সম্পদক আব্দুল জলিল,

কার্যকরী সদস্য  রবিউল ইসলাম প্রমুখ।