মুখস্ত করার জন্য একটি লেখাকে তোমার কতবার পড়তে হয়? তোমার বয়সে ফজলুল হক যেকোনো লেখা একবার পড়েই মুখস্ত করতে পারতেন। কোন ফজলুল হক, চিনতে পেরেছ তো? শের-ই-বাংলা এ. কে ফজলুল হক। ছোটবেলা থেকেই গরিব দুঃখী বাঙালির প্রতি ছিল তার মায়া। স্কুলের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে গ্রামের কৃষকদেরকে ফসলের বীজ ও কীটনাশক কিনে দিতেন। তুমি কি কখনো তোমার টিফিনের টাকার কিছু অংশ ভিক্ষুকদেরকে দান করেছো?
নিপীড়িত অসহায় কৃষকদের প্রতি ফজলুল হকের দরদ ছিলো বলেই বড় হয়ে তিনি সুদখোর মহাজনদের চক্রান্ত থেকে বাংলার দরিদ্র চাষী শ্রেণীকে বাঁচাতে “ঋণ সালিশি বোর্ড” গঠন করতে পেরেছিলেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে ইংরেজ শাসক গোষ্ঠীর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গড়ে তুলতে পেরেছিলেন “কৃষক-প্রজা পার্টি” নামে একটি রাজনৈতিক দল।
ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলায় পটু ছিলেন ফজলুল হক। সুযোগ পেলেই নদীতে সাঁতার কাটতে নেমে পড়তেন। পরিচিত লোকেরা তার বাবার কাছে নালিশ জানাত - ‘দেখবেন, আপনার ছেলেকে একদিন কুমিরে টেনে নিয়ে যাবে।’
জবাবে বাবা বলতেন - ‘তোমরা দেখে নিও, আমার ছেলে বড় হয়ে এদেশ থেকে কুমির তাড়াবে।’
বাবার কথাই সত্য হয়েছিল। কুমির রুপি অত্যাচারী ইংরেজ শাসকদেরকে ভারতবর্ষ থেকে তাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখেছিলেন এ.কে ফজলুল হক। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তৎকালীন লাহুড়ে অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের এক জনসভায় জ্বালাময়ী ভাষণের মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তানকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করার দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি। তার সে বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ হয়ে পাঞ্জাববাসীরা তাকে শের-ই-বাংলা বা বাংলার বাঘ বলে ডাকা শুরু করে। পরবর্তীতে এটাই হয়ে যায় তার উপাধি। ধরো, তোমার কোনো বীরত্বের জন্য বন্ধুরা তোমাকে বাঘ বা সিংহের সাথে তুলনা দিলো, কেমন লাগবে তোমার?