মালটা পাহাড়ি ফল হিসেবে পরিচিত হলেও সমতল ভূমিতে রয়েছে এ ফলের ব্যাপক সম্ভাবনা। উত্তরাঞ্চলে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বাড়ি -১ জাতের হলুদ মাল্টার।
মাটির গুণগত মান ও চাষ পদ্ধতি ঠিক থাকলে মালটা চাষ করে লাভবান হতে পারেন কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, দেশের সহজলভ্য একটি ফল হচ্ছে মাল্টা।মালটাতে বিভিন্ন ভিটামিন সহ রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ ।
জলঢাকায় বিষমুক্ত মালটার বাগান করে ভাগ্য পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলা খুটামারা ইউনিয়নের হরিশ্চন্দ্র পাঠ এলাকার হাজীপাড়া গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আশরাফুল (৩৮)। সরেজমিনে গিয়ে
জানা গেছে ২০১৯ সাল থেকে ২০ শতক জমিতে রাডারডিপি প্রকল্পের আওতায় ১২০ টি মালটা গাছের চারা রোপন করেন।এখন তার গাছে গাছে সবুজ পাতার ভিতরে ঝুলছে থোতা থোকা হলুদ মালটা ।
বর্তমানে বাগানের ৬০ শতক জমিতে রয়েছে ২৭৭ টি মালটা গাছ। বাগানে রয়েছে সাথী ফসল হিসেবে লেবু গাছ, কলা গাছ, পেপে গাছ,সহ সীম গাছ। এ সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকে ঝুকছেন মালটা চাষে ।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ব্যক্তিগতভাবে ২০২০ সালে জুন মাসে খুটামারা ইউনিয়নের হরিশ্চন্দ্র পাঠ এলাকার হাজীপাড়া গ্রামে ৬০ শতাংশ জমিতে রাডার ডিপি প্রকল্পের আওতায় ৬০ শতক জমিতে মালটা বাড়ি-১ জাতের ২৭৭ টি চারা রোপন করেন এবং প্রায় ১ বছরের মধ্যেই মালটা গাছে ফল ধরে এবং পরবর্তী ৮ মাস পর মালটা বাজারজাত করন করা যায়।
এদিকে ৫০০ মন বাড়ী -১ জাতের মালটা ধরেছে বলে ধারনা করছেন আশরাফুল ।যার বর্তমান বাজার মূল্য ২৩ লাখ ২৬ হাজার ৮ শত টাকা।
পাইকারদের কাছে ৪২০০ – ৪৫০০ টাকা মন ধরে প্রতি কেজি মালটা ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টি মালটা ধরে.। পাঁচটি মালটার ওজন হয় এক কেজি।
মালটা চাষী আশরাফুল বলেন বাগান থেকে মালটা ২০ লাখ টাকায় বিক্রি এবং সাথী ফসল ৩০ হাজার টাকা বিক্রি হবে বলে মনে করেন তিনি। প্রথমবার সফলতা পাওয়ায় এবছর আরো ৩৫ শতাংশ জমিতে নতুন করে মাল্টা চাষ শুরু করেন।
আশরাফুল আরো বলেন, তখন মালটার চারা গাছ প্রতিটি ১০০ টাকা করে কিনেছি।এবং বর্তমানে চারা বিক্রি করছি প্রতিপিছ ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়।
এদিকে মালটার বাগানে পরিচর্যায় প্রতিমাসে জৈব সার জিংক সালফার সহ বিভিন্ন উপকরণ বাবদ ৩০০০ টাকা খরচ হয়। ফলগুলো সুমিষ্ট হওয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হচ্ছি আমি।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের ব্লক সুপারভাইজার বলেন শীতের সময়ে মালটা গাছের পাতা লাল হওয়া রোগ ছড়া মালটার আর কোন বড় ধরনের রোগ হয় না । উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ বলেন মাল্টা চাষের
ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এই এলাকায। ধান উৎপাদন চেয়ে মালটা চাষে দশ গুণ বেশি লাভবান হওয়া যায় ।